আল আমিন মন্ডল: ঈদুল আযহা উপলক্ষে বগুড়ার গাবতলীতে কামাররা এখন মহাব্যস্ত। প্রচণ্ড গরমেও টুং টাং শব্দে মুখরিত কামারপল্লী। ফলে সুদিনের বাতাস বইছে কামার পরিবারগুলোতে। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে কামারপাড়া ততই সরগরম হয়ে উঠছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনের তাপে শরীর থেকে ঝড়ছে অবিরাম ঘাম তবুও দিন-রাত সমানতালে তারা এখন হাঁসুয়া, ছুরি, চাপাতি, দা, বটি, ভোজালি, কুড়াল তৈরী ও শান দিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে। এছাড়াও ক্রেতারা মাংস কাঁটার জন্য গাছের গুল টুকরাও ক্রয় করছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবছরে দামটা একটু বেশী।
গাবতলীর সোনারায়ের সাবেকপাড়া, বামুনিয়া, রামেশ্বরপুরের কামারচট্ট, কাগইলের সুলতানপুর, দাসকান্দি, দক্ষিণপাড়া কৃষ্ণচন্দ্রপুর কামারপল্লী ঘুরে দেখা যায়, কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে ভোর থেকে গভীর রাঁত পর্যন্ত কামাররা দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছে। অনেকে অতিরিক্ত অর্ডার নেওয়া কাজ ইতিমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে সারাবছরে কম কাজ হলেও এসময়ে কাজ বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পশুজবাই করার জন্য কামারপাড়ায় এখনও শোভা পাচ্ছে পশু জবাই করার বিভিন্ন উপকরণ।
সোনারায় সাবেকপাড়ার কর্মকাররা জানান, এ বছরে বেশ কাজ পেয়েছি। কাজ বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে। ছোট ও বড় ছুরি শান দিতে ১শত টাকা থেকে ১শত ৫০টাকা পর্য়ন্ত নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি তৈরী করা ছোট ছুরি ১শ টাকা থেকে ৩শত টাকা, দা ৪শ থেকে ৮শ টাকা, হাঁসুয়া ২শ ৫০টাকা থেকে ৪শ টাকা, বটি ২শ থেকে ৩শ টাকা, চাপাতি ৩শ থেকে ৪শ ৫০টাকা পর্য়ন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কাগইল কৈঢোপ গ্রামের ক্রেতা রাকিব হাসান ও হিজলী গ্রামের মাহবুব, শফিকুল, শাহীন মোল্লা জানান, পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কিনতে এসেছি। এবারে দাম বেশী নেওয়া হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের লোহার পাশাপাশি স্টিলের ছুরি ও চাকু ক্রয় করার চাহিদা বেশী।
বামুনিয়া কামার পল্লী এলাকার একাধিক কর্মকাররা জানান, বর্তমানে কয়লা ও রড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় শান দেওয়ার মজুরী ১শ টাকা থেকে ১৫০টাকা পর্য়ন্ত নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বাড়ী বাড়ী গিয়ে অনেকে শান দিচ্ছে।
কর্মকার গোবিন্দ ও শান্ত জানান, মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল আযহার সময় আমাদের বেশ আয় হয় তা দিয়ে সারাবছর চালাতে হয় সংসার। কর্মকাররা আরো জানান, বিশেষ করে ঈদ উল আযহা সময় কামার পল্লী’র সবাই কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।