গণঅধিকার পরিষদে ভিপি নুর ও রাশেদ একপক্ষ হয়ে অব্যাহতি দিয়েছিলেন রেজা কিবরিয়াকে। তিনি আবার আরেক পক্ষ হয়ে বহিষ্কার করেছেন নুর-রাশেদকে। এবার সংগঠনটিতে বলতে গেলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। কারণ, দুই পক্ষের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সচেতন সদস্যরা এবার যৌথ ঘোষণা দিয়েছেন।
তৃতীয় পক্ষের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ সবাই গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সচেতন সদস্য। গত ১৮ জুন আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার আলোচিত-সমালোচিত ইনসাফ কমিটির মিটিংয়ে যাওয়া ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কথিত সদস্য মেন্দি সাফাদির সঙ্গে দেখা করার কারণ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। উক্ত ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আহবায়ক ও সদস্য সচিবের অনুগত সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে সভার সভাপতি ড. রেজা কিবরিয়া সভাস্থল ত্যাগ করেন এবং সঞ্চালক সভা মুলতবি ঘোষণা করেন।
এর পরদিন গত ১৯ জুন সদস্য সচিব নুরুলহক নুর একটি সভার আহবান করেন, যা গঠনতন্ত্রের ৩৬(খ), ৩৭(ক), ৩৮, ৩৯(খ) ও ৩৯ (ঘ) অনুযায়ী অবৈধ। তবুও আমাদের কয়েকজন দলের স্বার্থে সেখানে উপস্থিত হই এবং কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে আহবায়ক দেশে আসার পূর্ব পর্যন্ত প্রটোকল অনুযায়ী ১নং যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনকে অন্তর্বতিকালীন আহবায়কের দায়িত্ব পালন করার পরামর্শ দেই। কিন্তু উপস্থিত সকলের মতামতকে উপেক্ষা করে একটি বানোয়াট প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, যেখানে মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনকে সরাসরি দলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ঘোষণা করা হয়। অবৈধ এই সিদ্ধান্তে দলের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
অন্যদিকে অদ্য ২০ জুন তারিখে আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার দলের ১নং যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুরকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক ও গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মো. হাসান আল মামুনকে ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ঘোষণা করেন। আমরা মনে করি, আহবায়কের এই কাজটি সংকটকে আরো ঘনিভূত করেছে। এমন পাল্টাপাল্টি কার্যক্রমে দলে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এমতাবস্থায়, আমরা কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্যগণ গঠনতন্ত্রের ১৮-গ-৮ ধারার ক্ষমতাবলে আমরা অত্র ঘেষাণায় স্বাক্ষর করছি এবং দলের এইরূপ পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের তৎপরতাকে নীতিবহির্ভূত এবং দলের শৃঙ্খলার ও জনমনে দলের ইমেজ ক্ষুন্নকারী বলে মনে করছি। সেইসাথে ঘটনার তদন্ত ও পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা গেল।
তদন্ত কমিটির সদস্যবৃন্দ
১. কর্নেল (অব:) মিয়া মশিউজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, শৃঙ্খলা এবং অডিট কমিটি
২. ব্যারিস্টার জিসান মহসিন, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, আইনজীবী অধিকারর পরিষদ
৩. সাদ্দাম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও উপদেষ্টা, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ
৪. জাকারিয়া পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি
৫. সাকিব হোসাইন, সহকারী আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক উপকমিটি