বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায় বলছেন, আমরা নাকি সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত মিথ্যা কথা বলি; কোনটা মিথ্যা? চালের দাম বেড়েছে সেটা কি মিথ্যা? ডালের দাম বেড়েছে সেটা কি মিথ্যা? আমাদের মা বোনেরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আগামী দিনে লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়েই, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই ভয়াবহ, ফ্যাসিস্ট সরকারকে উচ্ছেদ করে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
শুক্রবার বিকেলে শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে আয়োজিত জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকের ইফতার সম্মেলন, আগামী দিনে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা কিভাবে এই দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্য, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনবার জন্য। ৩৫ লাখ মানুষের নামে যে মিথ্যা মামলা তা প্রত্যাহার করবার জন্যে। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিনত করবার জন্য যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে সেই সংগ্রামের প্রথম যারা ভেনগার্ড হবে সেই স্বেচ্ছাসেবকদলের শপথ অনুষ্ঠান এটি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইফতারের পূর্বে আল্লাহ তায়ালার কাছে একটাই দোয়া চাইবো দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্ত করতে পারি সেই দোয়া করি। ৩৫ লক্ষ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা। টেকব্যাক বাংলাদেশ। দেশ আজকে ধ্বংসের দ্বাড়পান্তে পৌছে গেছে, অর্থনীতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, শিক্ষা নীতি ধ্বংস হয়েছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। আজকে এই দেশে যে নির্বাচন ব্যবস্থা তাকে ধ্বংস করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এ সরকার বারবার মানুষকে বোকা বানিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে, উন্নয়নের কথা বলে এ দেশকে শোষন করছে প্রতিদিন, প্রতি মুহুর্তে। তারা উন্নয়নের কথা বললেও তারা আসলে দুর্নীতি করে। তারা দুর্নীতি করেই দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা এমন একটা ক্রান্তিলগ্নে এসে উপস্থিত হয়েছি যে আগামী দিনগুলিতে আমরা যদি নিজেদের সংঘটিত করে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে না পারি তাহলে আমাদের জাতির অস্তিস্ত বিপন্ন হয়ে যাবে। সরকার এই দেশকে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিনত করবার জন্য, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করবার জন্য, দেশের মানুষকে শোষনের মধ্য দিয়ে একটা ব্যর্থ রষ্ট্রে পরিনত করতে চায়। আমাদের একটাই লক্ষ্য আমরা অবশ্যই নিজেদেরকে সংগঠিত করে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনে ঝাড়িয়ে পড়তে চাই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতিমধ্যে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে ভোলা থেকে, সেচ্ছাসেবকদলের নেতা আব্দুর রহিম বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। এ পর্যন্ত আন্দোলনে মোট ১৭ জন প্রান দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই ১০টি দাবি দিয়েছি, প্রথম দাবি হচ্ছে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, তত্তাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে এবং তত্তাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তারপরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানির সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, ভিডিও কলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, সিনিয়র সহ সভাপতি ইয়াসিন আলী, রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শামসুজ্জামান কামু, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার নুরুজ্জামান নুরু, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদল, জেলা স্বেচ্ছাসবকদলের বিভিন্ন ইউনিট, ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মী ও সমর্থকগণ উপস্থিত ছিলেন।