প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে তার উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন: আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। গত এক বছরে শতভাগ সফল না হলেও আমি চেষ্টার কোনো ক্রুটি করিনি। তিনি বলেন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রেডিও-টেলিভিশনে একযোগে এ ভাষণ সম্প্রচার করা হয়।
গত বছর ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী তৃতীয়বারের মতো শপথ গ্রহণ করেন, এ নিয়ে চারবার তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সরকারের নানা উনয়ন কর্মসূচি অর্জন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং পররাষ্ট্রনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন: এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রাহমানের জম্মবার্ষিকি উদযাপিত হতে চলছে। ২০২০ সালে স্বাধীনতার পূর্ণজয়ন্তী এবং এ দুটি উদযাপনের অনুষ্ঠান যুগ যুগ চলতে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন: গত এক বছরের সরকারের মূল্যায়ন পরিচালনা করতে গিয়ে, আমরা আপনাদেরকে সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এতে সব চেষ্টা যে সফল হয়েছে তা বলছি না,কিন্তু এটুকু বলতে পারি, আমাদের চেষ্টার কোনো ক্রুটি ছিলো না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: অতীতের ভুলভ্রান্তি ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন মানুষের অধিকার আদায় ও মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তার কন্যা হিসেবে আমার জীবনের লক্ষ্য ও মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমার উপর আপনারা ভরসা রাখুন।
ভাষণের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যার্তিত মা বোন এবং ১৫ আগস্টে নিহত স্বজন ও জেলখানায় হত্যার শিকার জাতীয় চার নেতাকে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত নিহত ও নির্যার্তিত ব্যক্তিদেরকেও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন: দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমি আবারও সবাইকে সতর্ক করার জন্য বলছি, দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেয়া যাবে না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন: যে ব্যক্তি অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং সাধারণ মানুষের হক যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।
গত বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর হাতে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যার ঘটনা ঘটে ছিল। তিনি বলেন: দু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনাকাঙ্খিত এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু সরকার এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের আশ্রয় দেয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু মূল্যবান প্রাণহানি ঘটে। এজন্য এডিস মশার বিস্তার রোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।