এখনকার ছাত্রনেতারা বেলা ১২টার আগে ঘুম থেকে ওঠে না জানিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন: অপ্রিয় হলেও কিছু সত্যি কথা বলছি (শোভন-রব্বানীকে ইঙ্গিত করে), আজকে ছাত্রনেতা ১২টার আগে ঘুম থেকে উঠে না, শুয়ে থাকে। সারা রাত জেগে জেগে কী করে আল্লাহই ভালো জানে।
বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন কোর্সের সূচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এসময় তিনি বলেন: ছাত্রনেতার সামনে ২০-৩০, ৫০টা হোন্ডা, আর হোন্ডায় আরোহীদের কারো মাথায় হেলমেট নেই। এতে আমরা লজ্জা পাই। আমি সড়কমন্ত্রী হিসেবে লজ্জা পাই। যখন দেখবো ঝাঁক ঝাঁক তরুণ হেলমেট নেই, সবাই আমাদের। ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। তারপর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হলেই তার আগেই ৫০টা হোন্ডা তাদের নিয়ে যাবে এমন নেতার দরকার নেই।
ভার্সিটিগুলোর হলে পলিটিক্যাল রুমের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন: পলিটিকাল রুম আছে আশ্চর্যের ব্যাপার। কাদের কাদের পলিটিকাল রুম আছে এটা খুজে বের কর। অপরকে শিখাবো আমার অপরাধের বিচার হবে না। ওরিয়েন্টেশনের মূল বিষয় হচ্ছে আচরণ। ইতিহাস বেশি জানার দরকার, ভালো আচরণ দরকার।
তিনি আরও বলেন: ছাত্রলীগের যে বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই জরুরি সেটা হচ্ছে আচরণগত। আমাদের মনে রাখতে হবে যত ভালোই উন্নয়ন হোক, আচরণ খারাপ হলে ভালো উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। একটা খারাপ আচরণ ১০টা ভালো উন্নয়ন অর্জনকে ঢেকে দিতে পারে। সে ধরনের ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটে। আমাদের নেত্রীর কোনো একটা অর্জন সারাজাতি প্রসংশার চোখে দেখছে। সারা বাংলায় আলোচনা হচ্ছে।
তিনি বলেন: ঠিক তখনই এমন একটা কাণ্ড, একটা আচরণ বাস্তবে দেখতে পাই, আমাদের নেত্রীর সোনালী অর্জন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আমরা তখন খুব কষ্ট পাই। আমরা মর্মাহত হই, আমরা যারা ছাত্রলীগ করেছি, আমাদের মন বিষাদে ভরে যায়। এটা আমরা আশা করি নাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন: বুয়েটের যারা ছাত্রলীগের পরিচয় আবরারকে হত্যা করে এ কর্মী আমাদের প্রয়োজন নেই। রাজশাহীতে পলিটেকনিক অধ্যক্ষকে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে অপমান করলো এ ধরনের নেতা আমাদের প্রয়োজন নেই। গুটি কয়েকের জন্য গোটা পার্টি দুর্নামের ভাগীদার হতে পারে না। গুটি কয়েকের অপকর্মের জন্য গোটা সরকার দায়ভার নিতে পারে না।
ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়ে তিনি আরও বলেন: ছাত্রলীগেরকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনাতে হবে। দুর্নামের একটা ধারা ছাত্র লীগের নামের সঙ্গে জড়িত গেছে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারা ফিরে আনা, এটা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।
তিনি আরও বলেন: ছাত্রলীগকে বঙ্গবন্ধুর পরিবার থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমি আজ একটা কথা বলি, এদেশে সবাই আমরা হারিয়ে যাবো। দুটি অর্জন কখনো মুছে যাবে না, একটা হলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর এই জনপদে মৃত্যু হবে না। আর এই জনপদে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার অর্জনের মৃত্যু হবে না। উত্তরাধিকার হিসেবে এই দুটি অর্জন এদেশে থেকে যাবে। এই জনপদ যতদিন থাকবে।
ওবায়দুল কাদের যোগ করেন: বঙ্গবন্ধুর পরিবারে সবার দিকে একে একে তাকাও। আমার আর্দশ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার। সততার রাজনীতি, মেধার রাজনীতির প্রতীক হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার।
ওরিয়েন্টেশন কোর্সের সূচনা পূর্বে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।