পটুয়াখালীর বাউফলে বনবিভাগের সাবেক আইনকর্মকতার বাড়িসহ একাধিক বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় তদন্তে নেমে ডাকাত চক্রের প্রধানসহ সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের সাথে থাকা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি রামদা, দু’টি শাবাল, একটি কাটারসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার ৮ নভেম্বর বিকেল ৪টায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান। এর আগে মঙ্গলবার বাউফলসহ দেশের একাধিক স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বরিশাল গৌরনদীর বাটাজোড় গ্রামের মো. সোলায়মান হোসেন ওরফে রনি, বাউফল উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বাচ্চু সরদার, একই গ্রামের উজ্জাল হোসেন ওরফে সাহেদ, মো. আমিনুল ইসলাম, পূর্বকালাইয়া গ্রামের জুলহাস ওরফে জুলফু ডাকাত, কনকদিয়া ইউনিয়নের ফারুক হোসেন, দাশপাড়া গ্রামের সুমন আকন ও পিরোজপুর জেলার নজরুল শেখ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বাউফলে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করেন। প্রথমে বাউফল উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের সুমন আকন নামের একজনকে সন্দেহজনক গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারেন একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র এসব ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার আবারও ডাকাতি করতে ঢাকা থেকে বরিশালে যাচ্ছিলেন ৪ ডাকাত সদস্য, এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের রাজৈন এলাকায় হানিফ পরিবহন থেকে বাচ্চু, উজ্জ্বল, জুলহাস ও নজরুলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে বরিশালের গৌরনদীর বাটাজোড় গ্রামের সোলায়মান রনিকে গ্রেপ্তার করে। ওই রাতে ডাকাত দলের সহযোগী ও আশ্রয়দাতা কালাইয়া গ্রামের আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আমিনুলের দেওয়া তথ্যে সুমন আকনের বাড়ি থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি রামদা, ২টি শাবাল, একটি কাটারসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি বাউফলে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। ডাকাতির ঘটনা উদঘটনে জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল মাঠে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন কাজ করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট ডাকাত দলের খোঁজ মিলে। দলের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছদ্মবেশে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকে। ডাকাতির দিন তারিখ ঠিক হলে সব সদস্য একাত্রিত হয়ে ডাকাতি করেন। ডাকাতির অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়।
বাউফলে চুরি ডাকাতি বেড়ে যাওয়া নিয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় ‘দুই মাসে দুই শতাধিক চুরি, বেড়েছে ডাকাতির ঘটনা’ শিরোনামে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। এতে জেলা পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অভিযান শুরু করেন।