বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। শেষ সময়ে জমে ওঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুর হাট 'কালাইয়া' হাট। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে হাট। সকাল থেকে চলছে বেচা-কেনা। তবে বৃষ্টিতে অনেকটা ভাটা পড়ে বেচা-কেনায়। বৃষ্টির বাগড়ায় দুর্ভোগে পড়েন হাটে আসা ক্রেতা বিক্রেতারা।
পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া পুশ হাট প্রায় ৪শ’ বছরের পুরানো হাট। সোমবার সকাল থেকে হাটে শুরু হয়ে বেচা-কেনা। কোরবানি উপলক্ষে দক্ষিণের পটুয়াখালী জেলার দশমিনা, গলাচিপা রাঙ্গাবালী, দুমকি, চরকাজল, ভোলা জেলার লালমোহন, নাজিরপুর, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, চরকুকরী, চর কলমীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু মহিষ ও ছাগল নিয়ে এসেছেন। এসব গরু মহিষ ও ছাগল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, লক্ষীপুর, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ফড়িয়ারা গরু মহিষ কিনতে এসেছেন।
হাট ঘুরে দেখা যায়, বিশাল হাট জুড়ে ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়। হাট ছাড়িয়ে চারপাশেও ভিড় দেখা যায়। বৃষ্টি অপেক্ষা করে চলছে বেচা-কেনা। হাটে ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা দামে গরু বিক্রি হচ্ছে। তবে তুলনামূলক গরুর দাম কিছুটা কম। ফড়িয়ারা গরু মহিষ কিনে ট্রাক, ছোট বড় নৌযানে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।
ভোলার চরকলমী এলাকা গরু বিক্রি করতে হাটে এসেছেন মো. মোজ্জামেল ব্যাপারী। তিনি জানান, গত সপ্তাহ চেয়ে গরুর দাম কম। যে গরু ৮০ হাজারে টাকা মূল্যের গরু বিক্রি হচ্ছে ৭০ হাজার টাকায়। প্রতি গরুতে গত সপ্তাহরের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা কম।
একই কথা জানান স্থানীয় কৃষক মো. নেছার উদ্দিন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে গরুর দাম বলছিল ৯০হাজার। বিক্রি করিনি। এসপ্তাহে দাম উঠছে ৮০হাজার।
মো. সাকিব নামের এক ক্রেতা জানান, বৃষ্টির কারণে অনেকটা দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পশুর দাম বেশি হাকাচ্ছেন।
কালাইয়া হাট ইজারাদার ও কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম ফয়সাল আহম্মেদ জানান, কালাইয়া গরু মহিষের হাট দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী হাট। ৫ একর আয়তনের এ হটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা আসেন। হাটে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরপত্তা দিতে ইউনিয়ন পরিষদ ও হাট ইজাদারদার কমিটির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। হাটের চারপাশে গ্রাম পুলিশ, দফাদার, ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক টিম টহল দিচ্ছে।
এছাড়াও হাটের নিরাপত্তায় বিট পুলিশ, নৌপুলিশ ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মেডিকেল টিম হাটে রয়েছেন।
কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনজার্চ মো. লুৎফর রহমান বলেন, সকাল থেকে হাটে অস্থায়ী ক্যাম্প করে জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি।
বাউফল উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কালাইয়া হাট অনেক বড় হাট। এখানে প্রায় ১০ হাজার গরু মহিষ ও ছাগল ওঠেছে। পশুর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা পার্থ সারথী দত্ত বলেন, উপজেলা প্রায় ৩০হাজার কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলার ১৫টি হাটে এসব কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি হাটে পশু স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল টিম কাজ করছে।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. বায়জেদুর রহমান বলেন, কোরবানির হাটে ছিনতাই, পকেট মার, মলম পার্টিদের উৎপাত বাড়ে। এসব বিষয় চিন্তা করে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুলিশ, নৌ পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। এছাড়াও হাট কর্তৃপক্ষকে স্বেচ্ছাসেবল টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত