টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ সকল আসামীর মুক্তিতে টাঙ্গাইলে মিষ্টি বিতরণ করেছে বিএনপির নেতাকর্মী ও সালাম পিন্টুর সমর্থকেরা।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে আজ ১ ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে এই সকল আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেওয়া হয়। যার ফলে এই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ দন্ডিত সব আসামি খালাস পেলেন।

১ ডিসেম্বর রোববার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। রায়ে সকল আসামীর খালাসের খবর পাওয়ার সাথে সাথে দুপুরে টাঙ্গাইল নিরালা মোড় শহীদ মিনারের সামনে জনগণের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও ছালাম পিন্টু সমর্থিত নেতাকর্মীরা।

এসময় জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, জেলা মহিলাদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মমতাজ করিম, জেলা যুবদলের আহবায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম রাশেদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ পাহেলী, শফিকুর রহমান শফিক, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম (ভিপি)সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে মিষ্টি বিতরণ করেন।

উল্লেখ্য,রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ লুৎফুজ্জামান বাবর ও সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যু দন্ডের রায় দেন। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদন্ড। এ ছাড়া ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দেন বিচারিক আদালত।

২০১৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলা দুটির নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। এটি সংশ্লিষ্ট শাখায় ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। আইনজীবীরা বলেন, কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদন্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর হাইকোর্টে গত ৩১ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়। ২০০৮ সালে ২২ জনকে আসামি করে দেয়া অভিযোগপত্র পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত হয়। এরপর তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিলো। আজ সেই মামলায় ডেথেরফারেন্সের আপিল শুনানি শেষে বিচারকদ্বয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অভিযুক্ত সকল আসামীদের খালাস দেওয়া হয়। আর এ খুশিতেই টাঙ্গাইল বিএনপি মিষ্টি বিতরণ করে এবং এ রায় ঘোষণার পর সালাম পিন্টুর ছোট ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু বিচার বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। কেননা এ রায়ের মাধ্যমে একটি অন্যায় ও জুলুমের অবসান ঘটলো। যার ফলে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আবার আস্থা ফিরে পেল।