১৬ বছর অপেক্ষায় রেখে যাওয়া ১৪ দিনের বউ, অতঃপর যা ঘটলো

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ী জোতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোতাহার হোসেন মানিক ২০০৯ সালে বিডিআরে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ শেষে ছুটিতে বাড়ি এসে পরিবারের পছন্দে পাশের গ্রামের ববি আক্তারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের মাত্র ১৪ দিন পর কর্মস্থলে ফিরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি। এরপর বিনা বিচারে দীর্ঘ ১৬ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়িতে ফেরেন মোতাহার।

বাড়ি ফিরে বাবার অনুপস্থিতি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মোতাহার; তিন বছর আগে তার বাবা আবুল হোসেন মারা যান। তবে এই দীর্ঘ সময়ে যে মানুষটি তাকে ছেড়ে যাননি, তিনি হলেন তার স্ত্রী ববি আক্তার। বিয়ের মাত্র ১৪ দিনের সংসার জীবনের পর ববি আক্তার ১৬ বছর ধরে স্বামীর মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন। স্বামীকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত ববি বলেন, “বিয়ের ১৪ দিনের মাথায় স্বামী কারাগারে চলে যান। তখন থেকে স্বামীর অপেক্ষায় ছিলাম। দিন গড়িয়ে বছর হয়েছে, বছর গড়িয়ে দশক হয়েছে, তবু তার মুক্তি মেলেনি। ১৬ বছর পর সেই দিন এলো।

মোতাহার হোসেন তার স্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আমি তার প্রতি গর্বিত, তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এত ত্যাগ তিনি স্বীকার করেছেন শুধুমাত্র আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য।” তিনি আরও বলেন, “১৬ বছর পর মায়ের কোলে ফেরা অন্যরকম এক অনুভূতি। এটা বলে বোঝানো যাবে না। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই।

মোতাহার হোসেনের এই দীর্ঘ কারাভোগ এবং তার স্ত্রীর অবিচল অপেক্ষার গল্প সমাজে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাদের এই ত্যাগ ও ধৈর্যের কাহিনী আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।