পুলিশের তদন্তে সামনে এলো এক মর্মান্তিক ও ভয়াবহ ঘটনা। ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ের শহরতলীর মতুঙ্গা থানা এলাকায় ঘটেছে ঘটনাটি। মানবপাচারের অভিযোগে সেখানে নয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের মধ্যে ছিলেন ৩২ বছরের এক তরুণীর স্বামীও। স্বামীকে জেল থেকে বের করার জন্য নিজের সন্তানকেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি! খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই তরুণীকে জামিন করাতে টাকার দরকার। তাই উপায় না পেয়ে নিজের ৪৫ দিনের শিশু কন্যাকে কর্নাটকে বিক্রি করতে দেন ওই মা! বদলে পান নগদ এক লাখ টাকা। এই ঘটনা সামনে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন অভিযুক্ত তরুণীর শাশুড়ি। তিনিই পুলিশের কাছে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত নারীর স্বামী রেল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ রয়েছে। পরে তার কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এরপর তরুণী তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে জেলে যান। সেখানেই তার স্বামী তাকে বলেন, যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করতেই হবে। না হলে তিনি জামিন পাবেন না। ওই তরুণী তখন গর্ভবতী ছিলেন। পরে তিনি সন্তানের জন্ম দেন এবং স্থির করেন, স্বামীকে জেল থেকে ছাড়াতে সন্তানকেই বিক্রি করে দেবেন! তাতে তার হাতে জামিনের টাকা চলে আসবে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শাশুড়ির অভিযোগে আটক ওই নারী স্বীকার করেছেন, সন্তানকে বিক্রি করে তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু, তার শাশুড়ি পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ায় এবং পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ায় সবকিছু সামনে চলে আসে। এই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরই বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করতে মাঠে নামে পুলিশ। দেশের নানা প্রান্তে বাচ্চাটির সন্ধানে খোঁজ শুরু করা হয়।
উল্লাসনগর, সুরাত, ভদোদরা, কর্ণাটকে খোঁজখবর নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আট দালালকে গ্রেফতার করা হয়। বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুর মাকেও আটক করে পুলিশ।
পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তের মাধ্যমে এই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। সোমবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। শিশুটিকেও উদ্ধার করে আপাতত নিজেদের হেফাজতে রেখেছে পুলিশ। যারা শিশুটিকে কিনেছিল, এবার তাদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।