সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হতে চান শহীদ ফেলানীর ভাই

কাঁটাতারে নিজের বোনের মতো আর কাউকে যেন ঝুলে থাকতে না হয়- সেজন্য সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হতে বিজিবি’তে যোগ দিতে চান ভারতীয় বাহিনী বিএসএফের গুলিতে শহীদ হওয়া ফেলানীর ছোট ভাই আরফান হোসেন।

তিনি বলেছেন, সীমান্তে আর কোন বাংলাদেশির লাশ যেন ঝুলে না থাকে। সেজন্য দেশবাসীকে পাহারা দিতে আমি বিজিবি’তে যোগ দিতে চাই। যোগ্যতার আলোকে সুযোগ পেলে আমি বিজিবি’তে যোগ দেব।

ফেলানীর পরিবারের সাথে ইফতার ও ঈদ উপহার প্রদান করতে গণমাধ্যম বিষয়ক গ্রুপ মিডিয়া মনিটর এর প্রতিনিধি দল সম্প্রতি কুড়িগ্রামে তাদের বাড়িতে যায়। এসময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় একথা জানান ফেলানির ছোট ভাই আরফান হোসেন।

সীমান্ত হত্যা বন্ধে দুই দেশের সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আরফান বলেন, বড় বোন যখন গুলিতে শহীদ হন, তখন আমার বয়স মাত্র ৭ বছর। আপার সাথে আমার তেমন কোন স্মৃতি মনে নেই। ধীরে ধীরে বুঝেছি, কীভাবে আপাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সীমান্তে বাংলাদেশের আর কোন মানুষকে যেন এভাবে হত্যা করা না হয়, সেটি আমি চাই। দুই দেশের সরকারকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি।

ফেলানির ছোট ভাইয়ের মতে, সীমান্তে যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া যেতে পারে। শাস্তি দেওয়া যায়। কিন্তু তাই বলে গুলি করে মেরে ফেলার অধিকার কোন আইনে নেই। আমার বোন ফেলানি তো কোন অন্যায় করেনি। চোরাকারবার করেনি। আমার বোনকে কেন গুলি করা হলো। কেন খুন করা হলো? আর কোন বোনের সাথে যেন এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

আরফান হোসেন জানান, সেই ঘটনার পর থেকে আমাদের পরিবারের পাশে ছিল বিজিবি। ছোটবেলা থেকেই আমরা ভাই-বোনেরা বিজিবির সহায়তা পেয়ে আসছি। সীমান্তে বিজিবি দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে। আমি সুযোগ পেলে বিজিবিতে যোগ দিয়ে দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। আমার বোনের মতো আর কোন বোনকে যেন কাঁটাতারে ঝুলে থাকতে না হয়, সেজন্য কাজ করতে চাই।

ফেলানীর পরিবারের সাথে ইফতার ও ঈদ উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম বিষয়ক সংগঠন মিডিয়া মনিটর এর প্রধান সমন্বয়ক ও ইয়ুথ জার্নালিস্ট কমিউনিটির সভাপতি আহসান কামরুল, মিডিয়া মনিটরের সমন্বয়ক নাজমুল হাসান, বিজিবির মিডিয়া কনসালটেন্ট সাঈফ ইবনে রফিক, লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিজিবি মহাপরিচালকের নির্দেশনায় লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম ফেলানীর বাবার দোকানে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল কিনে দেন।