বিস্ফোরণের পর থেকে এখনো জ্বলছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো। আগুনের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই শতাধিক মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রোববার (৫ জুন) বিকেল ৪টার পর চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দুপুরের দিকে তিনি ৪০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন। সিভিল সার্জন জানান, আহত অনেকের অবস্থা গুরুতর, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাগা আগুন এখনো জ্বলছে। আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একযোগে কাজ করছেন।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমের প্রধান আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, সকাল থেকে (রোববার) আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। এখনো পুরোপুরি নেভেনি। কিছু কনটেইনারে এখনো আগুন জ্বলছে।
তিনি বলেন, বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এবং ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কো-অর্ডিনেট করে রাসায়নিক ও সাধারণ কনটেইনার আলাদা করার চেষ্টা চলছে। আর যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর যেন কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীর প্রায় ২০০ জনবল এখানে কাজ করছে।
তিনি বলেন, রাসায়নিক পদার্থ যেগুলো বের হয়ে গেছে, তা বন্ধ করার চেষ্টা করছি। যাতে পরিস্থিতি আর খারাপ না হয়। কিছু সময় দিতে হবে।
শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। এখন ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপো ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় অন্তত ২০০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে।