
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কালাভরপুর গ্রামে ১৪ মার্চ রাতে আবারও হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জনপদে আতংক বিরাজ করছে। শুত্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে সালামত খানের লোকজন বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের তান্ডব চালায়। খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ আলমগীর খানের লোকজন প্রতিরোধ করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত ঘটে। এসময় মুখোমুখী সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়। এর মধ্যে আলমগীর খানের গ্রæপের দুই সহোদর সবুজ মিয়া ও দিলাওর মিয়াসহ ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয় মর্মে খবর পাওয়া গেছে। মধ্যযোগীয় তান্ডব নিয়ে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন নবীগঞ্জ থানার ওসি কামাল হোসেন। বিদ্যমান বিরোধকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ওসির বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। খবর পেয়ে গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একের পর এক হামলা মামলার ঘটনায় আতংকে পুরুষ শূণ্য গ্রামে উদ্ধেগ, উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দুই গ্রæপের হামলা পাল্টা হামলায় অস্থির হয়ে উঠেছে গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষ। খবর পেয়ে দুপুরে সেনাবাহিনী কালাভরপুর গ্রাম পরিদর্শন করেন। আইন শৃংখলার চরম অবনতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা সালামত খান ও একই গোত্রের আলমগীর খানের মধ্যে র্দীঘদিন ধরে বিরোধে চলে আসছে। ১৪ র্মাচ শুক্রবার রাতে সালামত খানের লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে আলমগীর সমর্থিত মৃত আখল মিয়ার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় তাদের সাথে বাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়। হামলার সময়ে পাকা বাড়ির নিরাপত্তা বেষ্টনীর গ্রিলের পাশের দেয়াল এবং বাড়ির পেছনসহ চারদিকের দেয়াল শাবল দিয়ে ভেঙ্গে গৃহে প্রবেশ করে প্রতিটি কক্ষ ভেঙ্গে তনছন করে। তাদের হামলা থেকে নারী শিশুও রক্ষা পায়নি। লোটপাট শেষে অগ্নি সংযোগ করে বাড়িটি জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে আলমগীর খান ঘটনাস্থলে গেলে মুখোমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে আহতরা, জামাল খান, লিটন মিয়া, খুরশেদ মিয়া রুমেল মিয়া, আলমগীর খান, নোবেল আহমেদ, নয়ন মিয়া, নানু মিয়া, অনু মিয়া, ফরাস মিয়া, কোকিল মিয়া, সাকির আলী, ফয়সাল, রোমান মিয়া, হোসাইন, মঈনউদ্দীন, ফয়সাল খান, সবুজ মিয়া, দেলাওর মিয়া, রুনা বেগম, আজিজা বেগম গুরুতর আহত হয়। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এর পূর্বে সালামত খানের লোকজন জমি দখল, বৃক্ষনিধন ও বোরো মৌসুমের ফসল কর্তন ও বসতবাড়ি ভাংচুর করে। স্থানীয় গ্রামবাসী সূত্রে জানাযায় যুবলীগ ক্যাডার মোহিত-হাদী-বদরুল-জাকির গংদের সাথে যুক্ত হয় বিএনপির দুলাল। গত প্রায় এক মাস যাবত এলাকায় অবাধে চলছে হামলা। মামলা, পাল্টা হামলা, ভাংচুর ও লোপাট। দিবা রাতে ওই গ্রামে শসস্ত্র মহড়ায় আতংকিত এলাকার জনপদ। আলমগীর খানের সমর্থক ফরিদ মিয়া চৌধুরী, নোমান মিয়া, জাকির হোসেন, দেলাওর মিয়া প্রমুখের প্রায় ৩০ বিঘা জমির বোরো ধান প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে নেয় সালামত বাহিনীর দুলাল-হাদি-মোহিদ-বদরুল গং। এছাড়াও, সালামত বাহিনীর হাদীর নেতৃত্বে আলমগীর খানের প্রায় ৪ শতাধিক বৃক্ষ কেটে নেয়া হয়। ইতিমধ্যে সামাদ মিয়া ও সাঈদ মিয়া চৌধুরীর বসতবাড়ি ভেঙ্গে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তারা প্রাণ রক্ষায় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বেপরোয়া সালামত বাহিনী একাধিকবার বসতবাড়িতে ঢুকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ৭জন মহিলাকে রক্তাক্ত জখম করে। এসব ঘটনায় মামলা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এলাকার জনৈক মারুফ মিয়াসহ দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র জানায়, বিগত একমাস ধরে হামলা, পাল্টা হামলা ও গুপ্ত হামলায় পরস্পর বিরোধী হাফডজন মামলা হলেও কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে উভয় গ্রæপের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে মামলা বাণিজ্যে মেতে উঠেছে পুলিশ। এনিয়ে এলাকাবাসী সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।