জিএম সাফিনুর ইসলাম মেজর: জামালপুরের বকশীগঞ্জে অনৈতিক সুবিধা দিতে রাজী না হওয়ায় সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মো. তামীমকে খাস কামরায় ঢুকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া, সাবেক সভাপতি আলী হাসান খোকা, দলিল লেখক শহিদুল্লাহ সহ ২২ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই সাব রেজিস্ট্রার।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার (২৭ মার্চ) বিকাল ৩টায় রেহেনা বেগম নামে একজন দাতা তার বোন রুবিনা বেগমের নামে হেবা দান দলিল করতে যান। তাদের পক্ষে শহিদুল্লাহ নামে একজন দলিল লেখক সাব রেজিস্ট্রারের নিকট হেবা দান দলিলটি উপস্থাপন করেন। সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মো. তামীম শুনানীকালে হেবা দান দলিল বাবদ কোন টাকা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে দাতা জমির টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
সাব রেজিস্ট্রার তামীম দলিল লেখক শহিদুল্লাহকে বলেন হেবা দান করতেও যখন দাতা গ্রহিতার মধ্যে টাকা লেনদেন হয়েছে তাই এটা সাফ কবলা করলে সরকার বড় ধরণের রাজস্ব পাবে। রাজস্ব আদায়ের কথা বলায় শহিদুল্লাহ সাবেক দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আলী হাসান খোকাকে এজলাসে নিয়ে আসেন। তিনিও দলিলটি সম্পাদনটি করতে সাব রেজিস্ট্রারকে চাপ প্রয়োগ করেন। সাব রেজিস্ট্রার তামীম আবারও সরকারের রাজস্বের বিষয়টি নিয়ে আলী হাসান খোকাকে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
এসময় তিনি বাইরে গিয়ে আরও ১৫/২০ জনকে নিয়ে সাব রেজিস্ট্রারের খাস কামরায় ঢুকে দলিল, অবিকল নকল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেন এবং তাকে খাস কামরায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ সাব রেজিস্ট্রার তামীমকে উদ্ধার করেন।
বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মো. তামিম বলেন, আমি গত দুই মাস বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ শেষে সম্প্রতি আবার কাজে যোগদান করে জানতে পারি তিনটি বালামে কাঁটা ছেঁড়া ও ঘষামাজা করে জমির পরিমাণ জালিয়াতী করা হয়েছে। এই জালিয়াতীতে ফিরোজ মিয়া নামে একজন দলিল লেখকের নাম তদন্তে চলে আসে। এই জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে আমি অবস্থান নেওয়ায় দলিল লেখকরা আমার ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৭ মার্চ) হেবা দান দলিল সম্পাদন করা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে কয়েকজন দলিল লেখক আমার খাস কামরায় আমার সঙ্গে অসদাচরণ করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেন সেই সঙ্গে আমাকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তাই আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে আইনি প্রতিকার চেয়েছি।
সাব রেজিস্ট্রারকে হুমকি প্রদানকারী দলিল লেখক আলী হাসান খোকাকে মোবাইলে ফোন করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বলেন, এ ঘটনায় সাব রেজিস্ট্রার তামীম নামীয় সাত জন ও অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত