টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সদ্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে পেটানোর প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছেন হজ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগের দলীয় পদ হারানো টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, রাজ্জাককে আমি পেটাব। কত বড় নেতা হইছে। আমার টাকায় লেখাপড়া কইরা, ওয়ান-ইলিভেনে সংস্কারবাদী হইছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলে মাফ করিয়েছি। বেইমানের বাচ্চা ঘুষ খেয়ে টাকা হইছে, ওর টাকা আমি … ঢুকামু, ও তো আমারে চিনে না।
মঙ্গলবার নির্বাচনী সহিংসতা মামলার আসামিসহ তার অনুসারীদের গ্রেপ্তার করলে তাদের মুক্তির দাবিতে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী নেতাকর্মীকে নিয়ে কালিহাতী থানার গেটের সামনে বসে অবস্থানের সময় এসব কথা বলেন।
এসময় তার নেতাকর্মীরা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রাখেন সমর্থকরা। এতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় উত্তেজনার। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
লতিফ সিদ্দিকীর রাস্তা অবরোধের খবর শুনে আওয়ামী লীগের মনোনীত পরাজিত প্রার্থী মোজাহারুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মালেক ভূঁইয়া, কালিহাতী পৌর মেয়র নুরন্নবী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনসহ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে থানার দিকে আসতে থাকেন। সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ দুই পক্ষের মধ্যে অবস্থান নিয়ে পরাজিত প্রার্থী মোজাহারুল ইসলাম তালুকদারের পক্ষকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়।
এ সময় নেতাকর্মীরা ‘কালিহাতীর মাটি রাজ্জাকের ঘাঁটি’ বলে স্লোগান দেয়। স্লোগান শুনে লতিফ সিদ্দিকী আরও ক্ষুব্ধ হয়ে কে কে লাঠি নিয়ে এসেছিল তাদের নাম জানতে চান। এ সময় তার সমর্থকরা তাদের নাম বলে দেন।
ওই দিন ৩টার দিকে লতিফ সিদ্দিকীর ভাই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের মধ্যস্থতায় দুজন এজাহারভুক্ত আসামিকে রেখে অন্য চারজনকে পুলিশ ছেড়ে দিলে অবরোধ তুলে নেন তারা। ৩ ঘণ্টা পর যান চলাচল শুরু হয়। বুধবার এজাহারভুক্ত আসামি দুই অনুসারীও আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
টাঙ্গাইল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা পান কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার। তিনি প্রায় ৩২ বছর ধরে সভাপতি পদে রয়েছেন। তার মনোনয়নের পেছনে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত পরাজিত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কোনো সম্মানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ রকম অসম্মানজনক কথা কেউ বলতে পারে না। কৃষিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লতিফ সিদ্দিকী যা বলেছেন তা শিষ্টাচারবহির্ভূত ও বিবেক বিবর্জিত। কাউকে অসম্মান করে নিজে সম্মান পাওয়া যায় না। তিনি টাকা ছড়িয়েছেন। প্রভাব বিস্তার করলে আমি জয়ী হতাম।