বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন পিকুর মৃত্যুর ঘটনায় শূন্য পদে আগামী ৯ মার্চ উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রতীক না থাকায় নিজ দলের প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। ইতিমধ্যে ১৪জন প্রার্থিতা করার ঘোষনা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা সবাই আওয়ামী লীগের পদ-পদবিধারী। এসব প্রার্থীর ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো কেশবপুর। চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী থাকবে। যার কারনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নজর এখন উপজেলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ.স.ম ফিরোজ এমপির গ্রিন সিগন্যালের দিকে। দলীয় এ সমর্থন পেতে বিভিন্ন মহলে জোর লবিং তদবির চালাচ্ছেন প্রার্থীরা।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্র মতে, ২০২১ সালের ২৩জুন নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু। গত বছরের ১৪ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত মারা যান তিনি। গত ২৪ জানুয়ারি শূন্য পদে উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী আগামী ৯ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপনির্বাচনে এখন পর্যন্ত ১৪জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন- প্রয়াত চেয়ারম্যানের ভাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারন সম্পাদক জিয়া উদ্দিন সুজন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. মালেক মিয়া, সাবেক সাধারন সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, কেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম খান টিটু, সহসভাপতি আবুল বশার খান, প্রচার সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. আসাদুল হক জুয়েল, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তুহিন, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম, সহসভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম রিপন, সহসভাপতি আনিচুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. সোহেল মাহমুদ মৃধা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য সচিব মো. খাইরুল কবির নিপু, সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন লাভলু ও ফ্রান্স প্রবাসী এনামুল হক ওরফে অপু দফাদার।
কেশবপুর ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, যারা সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলে নির্বাচনে অংশ নিবেন। দলীয় সমর্থন না পেলে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াবে তারা। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রয়াত চেয়ারম্যানের ভাই জিয়া উদ্দিন সুজন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মালেক মিয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তুহিন ও ফ্রান্স প্রবাসী এনামুল হক ওরফে অপু দফাদার শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ভোটের মাঠে থাকার প্রস্তুতি নিয়েই মাঠ গোছানোর কাজও করছেন তারা।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে থাকা একাধিক নেতা জানান, গত নির্বাচনেও অনেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সেবার নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান সারেহ উদ্দিন পিকু। তখন সকল প্রার্থীরা নৌকায় সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়ালেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এনামুল হক ওরফে অপু নৌকার বিপক্ষে নির্বাচনে অংশ নেন। এতে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগ তাকে বহিষ্কার করে। যার কারনে এ দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন অপুর। তবে দলীয় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন মালেক মিয়া, আবুল কালাম আজাদ তুহিন ও জিয়া উদ্দিন সুজন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মোসারেফ হোসেন খান জানান, নির্বাচন অংশ গ্রহণমুলক করতে দলীয় প্রতীক উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। যার কারনে প্রার্থী সংখ্যা বেশি। এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভায় আলোচনা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. জানান, গত ২৪ জানুয়ারি কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের শূন্য পদে উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষনা হয়। তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৫ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। ৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।