লেবাননের বিস্ফোরণ হামলা নাকি দুর্ঘটনা?

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণ কী কারণে ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সোশ্যাল মিডিয়ার একটি ভিডিওতে বিমান হামলার ছবি দেখা গেলেও আন্তর্জাতিক কোনো মিডিয়া বা লেবানন সরকারের পক্ষ থেকে তা স্বীকার করা হয়নি।

বিবিসি জানিয়েছে, বিস্ফোরণটি ঘটেছিল একটি গুদাম বা ওয়্যারহাউসে– যাতে বিপুল পরিমাণে একটি বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ মজুত করে রাখা ছিল, যারা নাম এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।

এটা এমন একটি রাসায়নিক পদার্থ যা প্রধানত: সার উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়– তবে আরো বহু শিল্প কারখানায় এটা কাজে লাগে। খনিতে যে বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয় তারও অন্যতম একটি উপাদান এটি।

বিবিসি বলছে, ওয়্যারহাউসটিতে ২৭০০ টন এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছিল এবং তা ছয় বছর ধরে অনিরাপদ অবস্থায় সেখানে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে ২০১৩ সালে একটি জাহাজে করে এই এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুত বন্দরে এসেছিল। কিন্তু কিভাবে তাতে আগুন লাগলো তা এখনো স্পষ্ট নয়।

লেবানন ভিত্তিক জিহাদী গোষ্ঠি হেজবুল্লাহকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ইসরাইলের সঙ্গে লেবাননের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ যাচ্ছে। তবে ইসরাইলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে ইসরাইলের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

অন্যদিকে বৈরুতে দুই দফায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোসহ হতাহতের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স, রাশিয়া, সিরিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ইরাক ও কুয়েত। জাতিসংঘের মহাসচিব লেবাননের বৈরুতের ওই ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য তেহরান মেডিকেল দল প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে। জর্ডানের রাজা ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণের সহায়তার কথা জানিয়েছে।

ডাচ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ডাক্তার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের ৬৭ জনের একটি দল প্রস্তুত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিস্ফোরণকে ভয়ংকর হামলা বলে উল্লেখ করে বোম্ব জাতীয় কিছুর কারণেই এই শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছন। তবে তিনি কোনো সহায়তার কথা জানাননি।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্রগুলোকে লেবাননের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্য বলছে, এখনই কোনো ধারণা করা যাবে না। তবে আমাদের বিশ্বাস, লেবানন কর্তৃপক্ষ খুব শিগগিরই এই বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করে প্রকৃত কারণ জানতে পারবে।