লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরে ফাতেমা আক্তার সাথী (২০) নামে এক গৃহবধূর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বামী-শ্বশুর ও ভাসুরকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। নিহত গৃহবধূ ফাতেমা মোহাম্মদ নগর গ্রামের মৃত সাইফুল্লাহ মাওলানার ছোট মেয়ে ও পাশ্ববর্তী দুর্গাপুর গ্রামের মো. রাজুর স্ত্রী। তাদের সংসারে ৩ বছরের একটি শিশুকন্যা সন্তান রয়েছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে খবর পেয়ে পুলিশ সদর উপজেলার মান্দারি ইউনিয়নের মোহাম্মদ নগর গ্রামের সাইফুল্লাহ মাওলানা বাড়ী থেকে নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করতে আটকদের নেওয়া হয় চন্দ্রগঞ্জ থানা হাজতে।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর থেকে রাজু কারণে-অকারণে প্রায় নির্যাতন করতো গৃহবধূ ফাতেমাকে। ফাতেমার পর রাজু নোয়াখালী সুবর্ণচরে ২য় বিয়ে করে। গত ১৫ দিন ধরে ফাতেমা তার বাবার বাড়ীতে। তার সঙ্গে স্বামী রাজু ও শিশুকন্যা রূপাও রয়েছে। (আজ) সোমবার ভোররাতে গোসল করতে পুকুরে যান গৃহবধূ ফাতেমা। ফিরতে দেরি হওয়াতে তার মা রোকেয়া বেগম পুকুরে যান। ওইসময় তিনি পুকুরে গিয়ে দেখেন ফাতেমার মরদেহ ভাসে। তার কান্নাকাটিতে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে। তখন ফাতেমার স্বামী রাজুও ঘর থেকে আসে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে বসতঘরে রাখা হয়। খবর পেয়ে রাজুর বাবা মোসলেহ উদ্দিন ও বড় ভাই বাবলু তাদের বাড়ী থেকে গৃহবধূদের বাড়ীতে আসলে। স্থানীয়রা বাবা-ছেলে ৩ জনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে
নিহত গৃহবধূর বড় ভাই আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের অভিযোগ করে জানান, রাজু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করতো। আমরা তাকে ১ লাখ টাকা যৌতুক ও দিলাম। এরপরও আমার বোন ফাতেমাকে মারধর করতো। রাজু নিজেই আমার বোনকে হত্যা করছে। ফাতের গলায় দাগ রয়েছে। আমাদের ধারনা গলা টিপে তাকে হত্যা করে এখন নাটক করছে।
গৃহবধূর স্বামী রাজু সাংবাদিকদের জানান, আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে ১৫ দিন ধরে এ বাড়ীতে। আমাদের মাঝে এখন দ্বন্দ্ব নেই। সেই আমাকে ঘুমে রেখে ফরজ গোসল করতে আসছে। ঘরে যেতে দেরি হওয়াতে আমার শ্বাশুড়ি পুকুরে এসে দেখতে পান আমার স্ত্রীর মরদেহ। আশপাশের লোকজনসহ ফাতেমার মরদেহ উদ্ধার করি পুকুর থেকে। খবর পেয়ে আমার বাবা-ভাই আসে। এখন আমাদের বেঁধে রাখছে। পুকুর পাড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির (জুতা) পাওয়া গেছে। এবং কিছু সুপারিও পড়ে ছিল। আমি এ ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করছি।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইসার হামিদ জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে গৃহবধূর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো ব্যবস্থা করতেছি। স্থানীয়রা স্বামী-শ্বশুর ও ভাসুরকে আটক করে রাখছে। আমরা তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করবো। পুরো ঘটনাটি আমাদের তদন্তধীন রয়েছে।