যুক্তরাষ্ট্রের ৬টি রাজ্যে এখন থেকে নারীরা জনসমক্ষে টপলেস থাকার অনুমতি পাচ্ছেন। দেশটির দশম সার্কিট আপিল আদালতের নতুন এক রায়ে এ অনুমতি দেয়া হলো।
এই সিদ্ধান্তের উৎস কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ফোর্ট কলিন্সে কয়েক দফায় চলমান এক আইনি লড়াই। ফোর্ট কলিন্সের একটি আঞ্চলিক অর্ডিন্যান্স অনুসারে শহরটিতে শার্ট ছাড়া নারীদের বাড়ির বাইরে চলাফেরা করা নিষিদ্ধ।
আপিল আদালতের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ওই অর্ডিন্যান্সটি এখন অসাংবিধানিক হয়ে গেল।
তবে প্রাথমিক উৎস ফোর্ট কলিন্স হলেও আদালতের রায়টি শুধু একটি শহরকে প্রভাবিত করবে না। দশম সার্কিট আদালতের রায়ে ইউটাহ, কলোরাডো, ওয়াইয়োমিং, নিউ মেক্সিকো, ক্যানসাস এবং ওকলাহোমা – এই ৬টি রাজ্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, ওই ৬টি রাজ্যের কোনো শহরে টপলেস থাকার বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আইন জারি নিষিদ্ধ হয়ে গেল।
ইয়াহু নিউজ জানায়, নারীর টপলেস থাকার অধিকার নিয়ে ছোটখাটো প্রচারণা নিয়ে শুরু হওয়া লড়াইটির জন্য এ এক বিশাল বিজয়। ‘ফ্রি দ্য নিপল মুভমেন্ট’ নামের এই বৈশ্বিক জেন্ডার সমতা আন্দোলনটির মূল বক্তব্য হলো: নারী তার দেহকে কীভাবে প্রদর্শন করবে সে অধিকার তার নিজের থাকা উচিত।
ফোর্ট কলিন্সের অর্ডিন্যান্সটি প্রথম ধাক্কা খায় গত ফেব্রুয়ারিতে, যখন দশম সার্কিট টপলেসবিরোধী আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেন। ওই সময় আদালত বলেন, এই আইনটি ‘নারীর স্তন যৌনতা সম্পর্কিত, কিন্তু পুরুষের স্তনের সঙ্গে যৌনতার সম্পর্ক নেই-এমন নেতিবাচক গৎবাঁধা চিন্তুধারা থেকে জন্ম নিয়েছে’।
ওই রায়ে আদালত এটাও উল্লেখ করেন, ডেনভার ও বোল্ডারসহ ফোর্ট কলিন্সের প্রতিবেশী শহরগুলোতে পাবলিক প্লেসে নারীদের টপলেস থাকার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু তাই বলে সেখানে তো নারীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে টপলেস ঘুরে বেড়ান না বা পাবলিক পুলে পোশাক ছাড়া সাঁতার কাটেন না। ফোর্ট কলিন্স তাদের আইনের পক্ষে এই আশঙ্কাগুলোকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরলে তার জবাবে রায়ে এ কথা জানান বিচারপতি।
শুক্রবারের হারের পরও সুপ্রিম কোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে ফোর্ট কলিন্সের স্থানীয় সরকারের। তবে তা না করে শেষমেশ ৩ লাখ ডলার খরচ করে প্রণীত আইনটি নিয়ে আর লড়তে রাজি না হয়ে হার মানার ঘোষণা দিয়েছে তারা।