বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: পটুয়াখালীর বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে পরিষদের কার্যক্রম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ইউএনও কার্যালয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করা হলেও মামলা জটিলতায় তা স্থাগিত হওয়ায় এমন ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, গত ১৪ আগস্ট ইউপি চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন পিকু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। তার মারা যাওয়ার দেড় মাসেও শূন্য পদে কাউকে দায়িত্ব না দেয়ায় জনগণ চরম দুভোর্গে পড়েছেন। জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, মৃত্যু সনদ, ডিজিটাল পরিষেবা কার্যক্রম, সরকারে বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচি ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারন মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর ইউপি কার্যক্রম সচল করতে গত ২৯ আগস্ট ইউএনও কার্যালয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন হয়। সকল ইউপি সদস্যদের ভোটাভুটিতে ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান গাজী প্যানেল চেয়ারম্যান-১, ১নং ইউপি সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও ১,২ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শিরিন আক্তার প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ নির্বাচিত হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান তার অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। ইউপির কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তবে ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জেলা জজ আদালতে ওই প্যানেল স্থাগিতের আবেদন করেন। আদালত ওই প্যানেল অস্থায়ী স্থগিত করেন। এতে ইউপির কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মহসিন মাস্টার বলেন,‘ছেলের স্কুলে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন। প্যানেল চেয়ারম্যান না থাকায় তা উত্তোলন করতে পারছি না। আরেক বাসিন্দা তুহিন আকন বলেন, জমির দলিল করব। ওয়ারিশ ও মৃত্যু সনদ না পাওয়ায় তা করতে পারছি না।
আরেক বাসিন্দা ও ভরিপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. আতিক ফয়সাল জানান, ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ইউনিয়ন পরিষদের সেবা বঞ্চিত। থেমে আছে সরকারের বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম ও উন্নয়ন প্রকল্প। এটা অতিদ্রুত নিরাসন করা দরকার।
এবিষয়ে ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান গাজী বলেন, ‘ সকল সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে আমি প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। দায়িত্বভার গ্রহণ করে পরিষদের থেকে থাকা কার্যক্রম সচল করি। তবে এক ইউপি সদস্য জালিয়াতি করে নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান দাবি করে আদালতে মামলা করেন। যিনি মামলা করেছেন তিনিও উপস্থিত থেকে ভোটাভুটিতে অংশ নেন। তার পরেও এমন ঘটনা দুঃখজনক।
এবিষয়ে জানতে আদালতে অভিযোগকারী ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী বলেন,‘ ভোটাভুটির মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করা হয়। যা স্থানীয় সরকার বিভাগ অনুমোদনও দিয়েছে। তবে এক ইউপি সদস্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত প্যানেল চেয়ারম্যানের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। এ আইনী জটিলতা নিরাসনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।