ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অনেকটাই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। নানা রকম উস্কানিমূলক আচরণ এবং প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে দেশটির গণমাধ্যম এবং সাংসদরা বারংবার বাংলাদেশকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি তাদের অভিলাষ জেগেছে বাংলাদেশ দখল করে নেওয়ার। ভারতের হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নষ্ট করেছে কৃষকদের ফসল।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চলছে চরম উত্তেজনা। বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে সাউন্ড গ্রেনেডসহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে ইতিমধ্যেই। শূন্য রেখায় কাঁটাতারের বেড়াসহ নানা রকম অযৌক্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিএসএফ। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) বেশ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ অংশে বোমা কান্ডে এবং ভারতের এমন আগ্রাসী আচরণকে মোটেও তোয়াজ করে চলছে না ইন্টেরিম সরকার। সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই বিএসএফকে সীমান্তের প্রতিরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছে।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি। যা একদমই ভালোভাবে নেয়নি নেটিজেনরা। তখন অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছিল সেনাপ্রধানের সঙ্গে গোপন বৈঠকের কি আবশ্যকতা রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে এতো ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়েছে এবং ভারত সরকার হাসিনাকে সবরকম সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে তাই স্বাভাবিকভাবেই জনমনে শঙ্কা জেগেছে নতুন করে কি ষড়যন্ত্র করছে ভারত।
এবার যেন সেই উত্তেজনার পারদে বিস্ফোরণ ঘটালো ভারতীয় মিডিয়া হিন্দুস্তান টাইমস। সম্প্রতি প্রতীকটির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানরা প্রথমবারের মতো নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসবেন। গত ২২ জানুয়ারির ওই প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়।
এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়,বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মহম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকি ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) প্রধান দলজিৎ সিং চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনার জন্য আগামী ১৬ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারত সফর করবেন।
এদিকে পত্রিকাটির এমন প্রতিবেদনে সামাজিক মাধ্যমে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন গুরুত্বপূর্ণ এমন সংবাদ কেন বাংলাদেশি মিডিয়াকে জানানো হলো না। কেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে আমাদের এই খবর জানতে হলো। তাহলে কি নতুন করে কোন কূটকৌশল চলছে কিনা?
সোশ্যাল হ্যান্ডেল এক্সে নিউজটি শেয়ার করে একজন লিখেছেন, ‘ বিজিবি কি ভারতের সাথে লিয়াজু করে চলছে?’ সেখানে কমেন্ট বক্সে একজন লিখেছেন, ‘নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে ভারত তা এখানেই স্পষ্ট’।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে রাফিদ নামে একজন লিখেছেন, ‘বিজিবি কি ঘুমায় নাকি ঘাস কাটে?’ রানা নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘বিজিবির মাল্টিমিডিয়া কি চুলটা ছিঁড়ছে? এমন সেনসিটিভ একটি সংবাদ কেন ভারতীয় মিডিয়া থেকে জানতে হলো?’