প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪, ৭:৫৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ২, ২০২৪, ২:২২ পি.এম
বেপরোয়া চাঁদের গাড়িতে মৃত্যুফাঁদে রাঙ্গুনিয়া, ২ দিনে নিহত ২
এম. মতিন, চট্টগ্রাম: ইট পোড়ানোর মৌসুম শুরু হওয়ায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা ও উপজেলা প্রশাসনের গাফিলতির কারণে রাঙ্গুনিয়া মরিয়ম নগর চৌমুহনী- রানিরহাট ডিসি সড়কসহ উপজেলার আন্ত সড়ক গুলো এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে একের পর এক ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে ঝড়েছে তাজা প্রাণ।
গত শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার রোয়াজারহাট এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়ানোবস্থায় বেপরোয়া লাকড়ি বোঝাই চাঁদের গাড়ি পিষে মারল দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার রাঙ্গুনিয়া
মো. ইমরান হোসেন (২৮) নামে এক সাংবাদিক কে। এ ঘটনার ২দিন না পেরোতেই আজ (১ জানুয়ারি) সকল ৮ টার দিকে উপজেলার ২নং হোসনাবাদ ইউনিয়ন পূর্ব নিশ্চিন্তাপুর ফকির টিলা এলাকায় বেপরোয়া চাঁদের গাড়ি (জীপ) ধাক্কায় আবদুল কুদ্দুস (৪২) নামে আরেক ভ্যান চালক নিহত হয়েছেন।
নিহত আবদুল কুদ্দুস উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব নিশ্চিন্তাপুর গ্রামের মৃত হাফেজুর রহমানে ১ম পুত্র। পেশায় তিনি একজন ভ্যানচালক।
এলাকাবাসী জানায়, নিহত দিনমজুর আবদুল কুদ্দুস পাহাড় থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ ভানে করে নিয়ে এসে এলাকায় বিক্রি করে সংসার চালাতো। প্রতিদিন ন্যায় আজ সকালে কাঠ সংগ্রহের উদ্দেশ্য ভ্যান (টলি) গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পাহাড়ের দিকে যাচ্ছিল। পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির 'ঢাকা গ-৯১৫ নাম্বারের একটি চাঁদের গাড়ি ভ্যানটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আবদুল কুদ্দুস মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টার দিকে নিশ্চিন্তাপুর থেকে চন্দ্রঘোনাগামী একটি মাল বোঝাই চাঁদের গাড়ি বেপরোয়া গতিতে যাচ্ছিল। গাড়িটির বেপরোয়া গতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে চালক পালিয়ে গেলেও ঘাতক চাঁদের গাড়িটি আটক করে স্থানীয়রা।
অনভিজ্ঞচালক দিয়ে বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে দাবি করে স্থানীয়রা বলেন, ইট পোড়ানোর মৌসুম আসলেই রাঙ্গুনিয়ার সড়কগুলোতে কাঠ বোঝাই গাড়ির বেপরোয়া গতির দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ছোট- বড় অধিকাংশ যানবাহন পরিচালনা করছে অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকেরা। অনেক ক্ষেত্রে শিশু কিশোরদেরও দেখা যায় গাড়ি চালাতে। ফলে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল।
জসিম উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তির অভিযোগ উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও বন বিভাগের উপর। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা পুলিশ, বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ ও ইছামতী রেঞ্জের আওতাধীন বিভিন্ন বিট অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের চোখের সামনেই দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া, বাঙ্গাল খালী, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে কাঠ বোঝাই গাড়ি উত্তর রাঙ্গুনিয়াসহ রাঙ্গুনিয়ার ইটের ভাটা গুলোতে প্রবেশ করছে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। সবাই নিজেদের ধান্ধায় ব্যস্থ আছে। ফলে প্রশাসনের সঠিক নজরদারি ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রায়শ ঘটছে দুর্ঘটনা। মরছে সাধারণ মানুষ।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত