বিশ্ব ইজতেমায় সংঘর্ষ নিয়ে সত্য আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে : খতমে নবুওয়ত

টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমায় সাদপন্থিদের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে সাদপন্থিদের নির্মম ও নৃশংস হামলা দাওয়াত ও তাবলিগের সুমহান কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা। এই বর্বরোচিত হামলায় ইতোমধ্যে ৪ জন মুসল্লি শাহাদাতবরণ করেছেন এবং শতাধিক তাবলিগের সাথী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তিনি আরও বলেন, কিছু গণমাধ্যম ঘটনাটিকে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ বলে প্রচার করছে, যা প্রকৃত সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা। এটি কোনো সংঘর্ষ নয়, বরং তাহাজ্জুদ নামাজরত নিরস্ত্র মুসল্লিদের ওপর সাদপন্থিদের সশস্ত্র ও পরিকল্পিত হামলা। এ ধরনের জঘন্য কাজের মাধ্যমে তারা বিশ্ব ইজতেমার শান্তি বিনষ্ট করতে এবং দাওয়াত ও তাবলিগের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।

মাওলানা রাব্বানী হাদিসের একটি গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘পুরো দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল্লাহর কাছে এক মুসলিম হত্যার চেয়ে সহজ।’ (সহীহ বুখারী)। তিনি বলেন, এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে যারা এই জঘন্য হামলা চালিয়েছে, তারা ইসলামের দুশমন।

তিনি আরও বলেন, এই সহিংসতা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে এবং বিশ্ব ইজতেমার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ। তৃতীয় শক্তি, দেশি-বিদেশি চক্র, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ও ইসরায়েলের ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। এই চক্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্য বিনষ্ট করে বাংলাদেশকে বিশৃঙ্খল অবস্থায় ঠেলে দিতে চায়। তাদের পরিকল্পনা শুধু বিশ্ব ইজতেমা বানচাল করা নয়, বরং এই সংঘর্ষকে টার্গেট কিলিংয়ের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ারও ষড়যন্ত্র চলছে।

প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার সমালোচনা করে মাওলানা রাব্বানী বলেন, মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের ব্যর্থতা অত্যন্ত দুঃখজনক। একটি ধর্মীয় সমাবেশে এভাবে রক্তপাত ও প্রাণহানি দেশ ও জাতির জন্য লজ্জার বিষয়। আমরা অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি এবং হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, মুসলিম উম্মাহর মধ্যে এই বিভেদ ও সংঘাত আমাদের ঐক্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমি উভয় পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই, আল্লাহর ভয় ও ইসলামের শান্তির শিক্ষাকে হৃদয়ে ধারণ করে সংঘাতের পথ পরিহার করুন। বিশ্ব ইজতেমার শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখতে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

তিনি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তির জন্য দোয়া করার পাশাপাশি প্রশাসন ও দেশের সচেতন নাগরিকদের এই চক্রান্ত রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান।