বাউফল প্রতিবেদক
পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার আগেই প্রার্থী ও সমর্থকরা প্রচার- প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন। গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট চাইছেন অনেকে। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচার- প্রচারণা শুরু করলেও প্রশাসনকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে সাধারণ ভোটাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে বাউফল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪জন, ভাইস – চেয়ারম্যান পদে দুই ও মহিলা ভাইস- চেয়ারম্যান পদে ২জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। গত ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ হয়েছে। আগামী ২ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দ না পাওয়ার আগে কোনো প্রার্থী প্রচার- প্রচারণা চালানো আচরণ বিধির লঙ্ঘন হলেও তা মানছেন না প্রার্থী ও সমর্থকরা। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকে প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন একাধিক প্রার্থী। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন তারা।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মশিউর রহমান লাবলু। তিনি মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকে উপজলোর বিভিন্ন হাটে বাজারে গণসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট চাইছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল (শুক্রবার) রাতে ঢাকার মীর হাজারী বাগে ঢাকায় কর্মরত বাউফলের বিভিন্ন ভোটাদের নিয়ে মিটিং করেছেন মশিউর রহমান লাবলু। সেখানে তিনি উন্নয়ন ও বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটও চেয়েছেন।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সল্পসংখ্যক লোক নিয়ে প্রচারণা চালানো যাবে। আর ঢাকাতে যদি মিটিং করে থাকি তা নির্বাচনী এলাকার বাহিরে।
অপরদিকে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল মোতালেব হাওলাদার। তিনি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানও। গতকাল থেকে তিনিও নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার আদাবাড়িয়া এলাকায় কবিরাজ বাড়ি মন্দিরে নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সেই উঠান বৈঠকে তিনিও ভোট চেয়েছেন।
উঠান বৈঠকের অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, সাধারন মানুষের সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাত করেছি মাত্র। যারা আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে প্রকাশ্য সভা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে লিখুন, প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলুন।
চেয়ারম্যান পদে মোসারেফ হোসেন খান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আনিসুর রহমান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার নিশুর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের সমর্থকরা প্রতীক বরাদ্দের আগেই ইউনিয়নে ইউনিয়নে প্রকাশ্য সভা করে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে মোসারেফ হোসেন খান বলেন, ঘরোয়াভাবে কয়েকজন কর্মীরা বসে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করতেছে। কারণ প্রতীক বরাদ্দের পর সময় খুবই কম। তাই কিছঠু কাজ এগিয়ে রাখা হচ্ছে। তবে আমাদের কোনো প্রচার প্রচারণা চলছে না।
প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারণার বিষয়টি সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগে পথসভা ও উঠান বৈঠক করা যাবে না। যদি কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাই তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি প্রার্থিতা বাতিলও করা হতে পারে।