‘বাংপাকি’ সমর্থককে দৌড়ে নিয়ে ফেলা হলো ময়লার ড্রেনে

18

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ। ভেন্যু বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের পাকিস্তানপন্থী গুটিকয়েক সমর্থক শুরু থেকেই খোদ বাংলাদেশের বিরোধিতা করে যাচ্ছে। মাঠেও ঢুকছে পাকিস্তানের জার্সি পরে। এসব কাণ্ড দেখে খোদ পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা বলেছিলেন: ‘বাংলাদেশে যা সমর্থন পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে পাকিস্তানে খেলছি’।

ফখর জামানসহ পাকিস্তানি খেলোয়াড় এবং বাংপাকি সমর্থকদের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে এবার ক্ষেপেছে বাংলাদেশের সমর্থকরা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২৬ নভেম্বর তেমনই এক বাংপাকি সমর্থককে মওকা বানিয়েছে তারা। প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও কেন পাকিস্তানের সমর্থক? সদুত্তর দিতে পারেনি ওই বাংপাকি। এরপরই শুরু হয় ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে পাকিস্তানের জার্সি ছেঁড়ার কর্মযজ্ঞ। অবস্থা বেগতিক দেখে ভোঁ-দৌড় দেয় ওই বাংপাকি সমর্থক। বাংলাদেশি সমর্থকদের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে লাফ দিয়ে পড়ে আবর্জনার ড্রেনে।

সেখানেই থামেনি বাংলাদেশ সমর্থকদের ক্ষোভ। শেষ পর্যন্ত কান ধরে মাফ চাইতে বাধ্য হয় ওই বাংপাকি সমর্থক। জীবনে আর কোনদিন পাকিস্তানের সমর্থন করবে না বলে জানায়। পাকিস্তানের জার্সি বা পতাকা পরে কোনদিন মাঠে আসবে না বলেও জানায়। এরপর অনেক মিনতি শেষে একপর্যায়ে মাফ পায় সে। এমন মুচলেকার পরে তাকে ময়লার ড্রেন থেকে উঠতে সাহায্য করে বাংলাদেশ সমর্থকরা।

গত কয়েকদিন থেকেই বাংলাদেশে সুবিধা করতে পারছে না বাংপাকি সমর্থকরা। এর আগে মিরপুরেও ধোলাই খেয়েছে তারা। খোদ গ্যালারিতে বাংপাকি সমর্থকদের উত্তম-মধ্যম দিয়ে শরীর থেকে পাকিস্তানের জার্সি খোলা হয়েছে। সেই ভিডিও এবং সংবাদও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ যেন পাকিস্তানি মানসিকতার ওপর চপোটাঘাত। তবে বাংলাদেশ সমর্থকরা বলছে, পাকিস্তানের যেকোন নাগরিক নিজ দেশের জার্সি পতাকা নিয়ে মাঠে গেলে তাদের হেনস্তা করা হবে না। হয়নিও। বরং পাকিস্তানি নারী দর্শকদের টিকিট পেতে ঝামেলা হওয়ায় টিকিটও সংগ্রহ করে দিয়েছে আন্দোলনরত তরুণরা।

‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ নামের বাংলাদেশি তরুণদের সংগঠন বলছে, পাকিস্তানের নাগরিকরা নিজ দেশের পতাকা ও জার্সি নিয়ে খেলা দেখতেই পারে। এটা তাদের অধিকার। দুনিয়ার যেকোন মানুষেরই অধিকার রয়েছে নিজ দেশের পতাকা ও জার্সি পরে নিজের দেশকে সমর্থন করার। তবে বাংলাদেশের খেয়ে, বাংলাদেশের পরে, বাংলার বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে একাত্তরের গণহত্যাকারী ও লাখ লাখ মা-বোনের ধর্ষক পাকিস্তানকে সমর্থন করার অধিকার বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের নেই। এটা করতে দেয়া হবে না। এরা মীরজাফর ও নিমক হারাম। এই বাংপাকিদের যেকোন মূল্যে উচিৎ শিক্ষা দিয়ে প্রতিহত করা হবে। একইসাথে আমরা পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ কখনোই পাকিস্তান নয়। একাত্তরের গণহত্যা ও ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশকে ওদের জন্য আমরা নরক বানিয়ে রাখব।