প্রবাসীকে বিয়ে করে কোটি টাকার প্রতারণা, অভিনেত্রী গ্রেপ্তার

11

সৌদি আরব প্রবাসী কামরুল ইসলাম জুয়েলের সঙ্গে প্রথমে ফেসবুকে প্রেম। সেই প্রেম থেকে বিয়ে। কৌশলে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া। সেই টাকায় কিনেছেন ফ্ল্যাটও। তিনি অভিনেত্রী রোমানা স্বর্ণা।

স্বর্ণা ও জুয়েলের বিয়ে হয় ২০১৯ সালের মার্চে। বিয়ের পর তাঁরা একসঙ্গে ছিলেনও কিছুদিন। অতঃপর জুয়েল পুনরায় সৌদি চলে যান। এরপর জুয়েলকে স্বর্ণা জানান, তাঁর সঙ্গে আর সংসার করতে পারবেন না তিনি। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি।

জুয়েল সৌদি থেকে দেশে ফিরে আজ বৃহস্পতিবার স্বর্ণার নামে প্রতারণার মামলা করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানায়। মামলার পর আজ বিকেলে রাজধানীর লালমাটিয়ার সি ব্লকের একটি বাসা থেকে রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল ও মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ।

ওসি বলেন, ‘তাঁদের দুজনের মধ্যে প্রথমে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বাদী জুয়েলের অভিযোগ, সম্পর্ক শুরুর পর থেকে স্বর্ণা বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিতেন। একপর্যায়ে তাঁরা বিয়েও করেন। বিয়ের পর ফ্ল্যাট কেনার টাকাও নিয়েছেন স্বর্ণা। এভাবে এক কোটি ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে বাদীর দাবি। সর্বশেষে জুয়েলকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বলা হয়। এর আগে আবার জুয়েলের আপত্তিকর ছবি তুলে তা নিয়ে ব্লাকমেইলও করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জুয়েলের দাবি। তারপর তিনি মামলা করেছেন। মামলার পর আমরা স্বর্ণাকে গ্রেপ্তার করেছি। বিস্তারিত জানার জন্য স্বর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’

এদিকে এডিসি মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ‘বাদী জুয়েল মামলার এজাহারে ৯১ লাখ টাকা দেওয়ার প্রমাণের কথা উল্লেখ করেছেন। টাকাগুলো বিভিন্ন সময় ব্যাংকের মাধ্যমে দিয়েছেন। এ ছাড়া অনেক টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন, তার লিখিত দলিল তাঁর কাছে নেই।’

মামলার বাদীর বরাত দিয়ে মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ‘২০১৯ সালের মার্চ মাসে তাঁদের বিয়ে হয়। সে সময় স্বর্ণা কাবিননামায় বিধবা বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সংসার রয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে জুয়েলকে ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে বলে স্বর্ণা তাঁকে জানান। তারপর জুয়েল দেশে ফিরে আসেন ফেব্রুয়ারি মাসে। কোনো উপায় না দেখে তিনি আজ মামলা করেছেন।’

এডিসি আরো বলেন, ‘মামলা করার আগে জুয়েল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিবাহ ও তালাক শাখায় যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তার নামে কোনো তালাকনামা পৌঁছায়নি তখনও। এ ছাড়া স্বর্ণাও কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে জুয়েল আমাকে জানিয়েছেন। জুয়েল মামলার এজাহারে তাঁদের ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথন ও নানা বিষয়ের প্রমাণ দেখিয়েছেন।’

২০০৬ সালের শেষের দিকে মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে নাম লেখান রোমানা স্বর্ণা। টিভি পর্দার এই অভিনেত্রী সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। ২০১৫ সালে তন্ময় তানসেনের ‘পদ্ম পাতার জল’ এবং ২০১৬ সালে একই পরিচালকের ‘রান আউট’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।