প্রতারণার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সিফাত উল্লাহ (১৯) এর পরিবার। প্রতারক চক্রটি কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা। গত রোববার এ ঘটনা ঘটে।
শহীদ সিফাত উল্লাহ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মুনিয়ারীকান্দা গ্রামের হাফেজ মাওলানা নুরুজ্জামানের ছেলে। সে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এমদাদুল উলূম জামিয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার সরহে বেকায়া জামায়াতের শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, সন্তান সিফাত উল্লাহ হারিয়ে দরিদ্র পরিবারটি দিশাহারা হয়ে পড়েন। ঘটনার পর তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ছিল শোকের মাতম। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে ২ লাখ টাকা অনুদান দেয়। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে আরও ১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়। শহীদ সিফাত উল্লাহর পরিবার ছেলে হারানোর শোক কাটতে না কাটতেই এবার প্রতারক চক্র তার পরিবারর কাছ থেকে অভিনব কায়দায় একটি প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। রোববার দুপুরে এ ঘটনার সম্মুখীন হয়।
শহীদ সিফাত উল্লাহর বাবা হাফেজ মাওলানা নুরুজ্জামান জানান, ৬ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিচয় দিয়ে একটি ফোনকল আসে। ফোনের অপর প্রান্ত হতে এতে বলা হয় শহীদ সিফাত উল্লাহর পরিবারের নামে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আজকে প্রথম ধাপে ২ লাখ টাকা পাঠাবে বাকি ৩ লাখ আগামীকাল পাঠানো হবে। সেইজন্য ব্যাংকের একাউন্ট নম্মর দিতে হবে। তখন সিফাত উল্লাহর বাবা জানান নিজের নামে কোনো ব্যাংক একাউন্ট নেই। তখন পরিবারের অন্য কারো একাউন্ট নম্বর দিতে বলা হয়। এরপর নিহতের চাচা ঢাকায় অবস্থানরত অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী আমিনুল হকের একাউন্ট নম্বর দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, কিছুক্ষণ পরে জানানো হয় এটিএম কার্ডের ছবি পাঠাতে হবে। পরে হোয়াটসঅ্যাপে এটিএম কার্ডের ছবি পাঠানো হয়। কিছু সময় পর জানতে পারেন প্রতারক চক্রটি শহীদ সিফাত উল্লাহর চাচার একাউন্ট থেকে ১ লাখ ৫৬ হাজার একশত পঞ্চাশ টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে বারবার ওই নম্বরে ফোন দিলেও রিসিভ হয়নি। পরে ঢাকার কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন শহীদের চাচা আমিনুল ইসলাম। এ এমস সিফাতের বাবা মাওলানা নুরুজ্জামান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলে হারিয়ে এমনিতেই আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার স্বপ্ন ভেঙে গেছে, আমি খুব দরিদ্র মানুষ, এই সময়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ায় আমি বড় বিপদে পড়ে গেছি। তিনি আশঙ্কা করেন শহীদ সিফাত উল্লাহর মতো আর কেউ যেন প্রতারিত না হয়।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং বেদনাদায়ক। আমি আগেই নিহত সিফাত উল্লাহর পরিবারকে সতর্ক করেছিলাম এই ধরনের প্রতারণা হতে পারে। তারা তা সহজসরল তাই হয়তো বুঝতে পারেনি। খুব দ্রুত প্রতারক চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।