বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: পটুয়াখালীর বাউফলে ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা এক তরুণীকে (১৮) উদ্ধারের নামে পুলিশ প্রেমিকের বাবাকে বেধরক মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে আহত ওই ব্যক্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন প্রেমিক যুগল। বুধবার রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে মারধরের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।
থানা, প্রেমিকের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাজিরপুর গ্রামের বাশার হাওলাদারের ছেলে মো. রিয়াজ হাওলাদারের (২৬) সাথে প্রায় দুই বছর আগে সিলেটের জালালাবাদ উপজেলার পুরান কামারুকা গ্রামের এক তরুণীর মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। পরে তারা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। তাদের প্রেমের সর্ম্পক মেনে নিতে রাজি হয়নি ওই তরুণীর পরিবার। এতে গত চারদিন আগে ওই তরুণী ঘর ছেড়ে পালিয়ে রিয়াজের বাড়িতে চলে আসনে। পরে রিয়াজ ওই তরুণীকে নিয়ে সূর্যমণি ইউনিয়নে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
এ ঘটনায় তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বাউফল থানার উপপরির্দশক মো. মনিরুজ্জামান ও আবুল বশারসহ তিন পুলিশ সদস্য বুধরাত রাত তিনটার দিকে প্রেমিক রিয়াজ হাওলাদারের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে প্রেমিক যুগলকে না পেয়ে পুলিশ প্রেমিক রিয়াজের বাবা বাশার হাওলাদারকে মারধর করেন।
আহত বাশার হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, সিলেট থেকে আসা মেয়েকে উদ্ধার করতে গভীর রাতে তিন পুলিশ তার বাড়িতে আসেন। বাড়িতে তার ছেলে ও সিলেটের ওই মেয়েকে না পেয়ে পুলিশের এস.আই মনির ও বশার তাকে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। আরও এক পুলিশ সদস্য তাকে মারধর করেন। তার নাম তিনি জানেন না বলে জানান।
ওই রাতেই পুলিশ সূর্যমণি থেকে প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় প্রেমিক রিয়াজের বাবাকেও থানায় নিয়ে আটকে রাখা হয়। মারধরের শিকার বাশার হাওলাদার রাত সোয়া চারটার দিকে থানায় অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, সিলেটের জালালাবাদ থানায় দায়েরকৃত মামলার সূত্র ধরে পুলিশ প্রেমিক রিয়াজ হাওলাদারের বাড়িতে অভিযান চালায়। তাকে না পেয়ে তার বাবার দেয়া তথ্যমতে সূর্যমনির রামনগর গ্রামের বোনের বাড়ি থেকে প্রেমিককে আটক করে এবং ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
প্রেমিকের বাবাকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ সত্য নয়। ওই ব্যক্তি মৃগী রোগে আক্রান্ত। থানায় বসে তিনি অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।