শাহাদাত হোসেন নোবেল, দিঘলিয়া (খুলনা):
দ্রব্যমূল্যের বাজারে উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে অনেকে অনেক ধরনের মন্তব্য করছেন, যা কতটা সঠিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
খুলনা সহ দেশের সাধারণ মানুষের আয় উপার্জনের ওপর নির্ভর করে খরচের ক্ষেত্রে চলছে অভাব অনটন দুঃখ দুর্দশার হাহাকার ফলে এই মুহূর্তে দ্রব্যমূল্যর পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে না পারলে আয়ের ওপর নিত্যদিনের খরচের সামঞ্জস্য রাখতে মূর্চ্ছা যাচ্ছে নিম্ন মধ্যম আয়েরের মানুষদের। কারণ বর্তমানে বাজারে গেলেই ১২০ টাকা থেকে ৮০ টাকার নিচে কোন ধরনের সবজি মিলছে না। সাথে কাঁচা মরিচের তালমাতাল অবস্থা প্রায় বছর খানেক ধরে চললেও সর্বশেষ ৪০০ টাকা ঠেকেছে কেজিতে। তাও মাঝেমধ্যে সরবরাহের অভাবে বাজারে সংকট দেখা দিচ্ছে।
অন্যান্য দেশের তুলনায় দ্রব্যমূল্যের হার বাংলাদেশে বেশি। মানুষের আয় বা ক্রয়ক্ষমতা যদি বাড়ে তবে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি মেনে নিতে খুব একটা কষ্ট হয় না। কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না মানুষের আয়। সীমিত আয়ের মানুষদের এখন একি অবস্থা। ফলে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, এমনকি স্থির আয়ের মানুষের জীবন পড়েছে সংকটে।
অপরদিকে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের একজন ক্রেতা বলেন ১ হাজার টাকা নিয়ে সবজি বাজারে ঢুকলে মাত্র কয়েক পদের সবজি কিনলেই পকেট ফাঁকা হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে মাছ-মাংস আমাদের মতন মানুষদের কাছে থেকে যাচ্ছে সাদ সাধ্যের বাইরে।
যদিও ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে নির্যাতিত ফ্যাসিস্ট সরকার পতন হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছে অবৈধ কালো বাজারী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা।
ডিমের দাম কিছুটা কমে ১৬০ টাকা ডজন হয়েছে। মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকা ২৬০ টাকার সোনালি মুরগি ৩০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে শতের কোঠায়, কাঁচা মরিচ কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার কমে মিলছে না।পিয়াজের ও আগের তুলনায় দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংস চাউলের দাম।
বাজারে সরজমিনে দেখা গেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার কমে কোন সবজিই নাই। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে শাকের দাম আটিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে বেগুন ১০০ থেকে ১৬০ টাকা হয়ে গেছে পটল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঢ্যারশ ৮০ টাকা ধুন্দল যা গত এক সপ্তাহ আগেও মাইকিং করে ২০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেলেও তা এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় মিলছে না। একটু ভালো মানের পেপে কিনতে গেলে ৫০ টাকা শসার কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বরবটি, ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, গাজর ১৬০ টাকা, সিম ১৩০ থেকে ২৫০ টাকা, টমেটো ২৪০ টাকা, লাউ, চালকুমড়া, পিস ১০০ টাকা ছুঁয়েছে পাতাকপি প্রতি কেজি ৮০ টাকা। পুঁইশাক এখন আর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে না বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা আটিতে । রসুন দুইশ থেকে ২৪০ টাকা আদার দামও বেড়েছে তা ৩১০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। একই সাথে নগরীর বিভিন্ন বিক্রেতারা জানান আগের মতই মসুর ডাল ১১০থেকে ১৩৫ টাকা ছোলা ১৪০ টাকা।
এ সময় খুলনা নাগরিক ফোরামের ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট নেতা গণমাধ্যমকে বলেন দেশের সাধারণ মানুষের আয় উপার্জন না বাড়লেও নিত্য পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের এক সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা চাপমুক্ত হতে চাই তোমাদের (শিক্ষার্থী) মাধ্যমে। তোমাদের হাতটা এত শক্তিশালী হয়েছে, আমার মনে হয় তোমরা যেখানে হাত দেবে সেখানেই সোনা ফলবে। আমরা আসলেই ব্যর্থ হয়েছি। আমরা এখন তোমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি।’ এই মুহূর্তে দ্রব্যমূল্যর লাগাম টেনে আমাদের স্বপ্ন পূরণের আসা আমরা সবাই দেখি।