দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধা দেওয়ায় নিজের স্ত্রী নুর জাহান বেগমকে (৪০) জবাই করে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী নুর মোহাম্মদ মুন্সী (৪৫)। শনিবার দিবাগত রাতে পটুয়াখালীর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামে বলইকাঠি গ্রামে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে।
পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ ঘাতক স্বামী নুরকে আজ রবিবার সকালে আটক করেছে। নিহত নুর জাহানের দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে মেয়ে মোসা. রাবেয়া বেগমের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে মো. বেল্লাল মুন্সী (২৩) একই বাড়িতে বসবাস করেন।
নিহতের ছেলে বেল্লাল সাংবাদিকদের জানায়, তার বাবা নুর মোহম্মদ বিভিন্ন পেশায় ছিল। রিকশা চালাতো, নির্মাণ শ্রমিক ছিল, কখনও ইমামতিও করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তার বাবা-মার মধ্যে দাম্পত্যের বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের একমাত্র কারণ ছিল তার দ্বিতীয় বিয়ে করার। তার মা বিষয়টি স্থানীয়দের কাছেও জানিয়েছেন। দ্বিতীয় বিয়েতে তার মা সম্মতি না দেওয়ায় মা যে তার বাবা বাড়ি থেকে জমি পেয়েছে তা বিক্রি করে টাকা এনে দিতে চাপ দিতে থাকে।
এনিয়ে নুর জাহান বেগমকে অনেক মারধর করত নুর মোহম্মদ। জমি বিক্রির এই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে ওই মহিলার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল। শনিবার বিকেলেও তাকে মারধর করা হয়।
বেল্লাল আরও জানায়, রাতে তিনি ঘরের পাশের কক্ষে স্ত্রী নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। দিবাগত রাত ৩টার দিকে বেল্লালের স্ত্রী নুপুর বেগম তার কক্ষের পাশ দিয়ে কাউকে যেন চলে যাওয়ার শব্দ পায়। শ্বাশুড়ির গোঙাগানি শুনতে পেয়ে তাৎক্ষনিক আমাকে জাগিয়ে তোলে। বেল্লাল তার মায়ের কক্ষে গিয়ে দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মাকে পড়ে থাকতে দেখতে পান। আসলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে না পেরেই আমার মাকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করে।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত নুর জাহানের লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, নুরজাহানকে জবাই করা রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এসময় পাশেই রক্তমাখা ছুরি পড়ে ছিল।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক স্বামী নুর মোহম্মদকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।