বরগুনা প্রতিনিধি: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় দেড়বছর ধরে কারাগারে বরগুনার সাংবাদিক মীর জামাল। দীর্ঘদিন কেটে গেলেও অনেক চেষ্টা করে জামিন মেলেনি তার। বরং আদালতে ঘুরতে ঘুরতে জামালের পরিবার এখন নিঃস্ব। এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিকরা।
গত বছরের ৬ মে লামিয়া নামের এক নারীর দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামাল ও নিউজ ২৪ চ্যানেলের প্রতিনিধি সুমন শিকদারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিছুদিন পর সুমন শিকদারসহ ৫ জনকে জামিন দেওয়া হলেও দেড়বছর ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন জামাল। দীর্ঘদিন ধরে জামিনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে পরিবার, হারিয়েছে সর্বস্বও।
কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে জামালের মা বলেন, আমার ছেলে এতদিন কী কারণে হাজতে বলতে পারি না। ছেলের চিন্তায় বাবা-মা আমরা দু’জনই মনে হয় মারা যাব।
জামালের বাবা জানান, এ মামলায় আমরা নিজেরা অনেক কর্জ করেছি। এখন আমরা একেবারে নিঃস্ব। এমন অবস্থা হয়েছে যে, আমার চলার মতো কোনো পথ নাই।
জানা যায়, জামাল জেলে যাওয়ার পর তার দেড় বছরের কন্যাকে নিয়ে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তার স্ত্রী লিমা। তিনি বলেন, বরগুনায় আমরা ভাড়া বাসায় ছিলাম। সেখানে কয়েকমাস ভাড়া না দেওয়ার কারণে আমাদেরকে বের করে দিয়েছে। এখন আমি আমার বাচ্চা নিয়ে বাবার বাসায় আছি।
বরগুনার সাংবাদিক নেতারা বলছেন, সাংবাদিকদের অপরাজনীতির কারণে জামাল আজ কারাবন্দি। বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাসান ঝন্টু বলেন, বরগুনাসহ সারাদেশে যেসব সাংবাদিকরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তারা যেন ন্যায় বিচার পান সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্যা, গত বছরের ২৪ এপ্রিল লামিয়া নামের এক নারী সম্মানহানি এবং তার ঘরে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। এরপর তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত কারাগারে রয়েছেন সাংবাদিক জামাল।