দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করলে এসিড নিক্ষেপের মতো ধর্ষণও কমবে

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করলে অতীতে এসিড নিক্ষেপ যেমন কমেছে ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতনও কমবে বলে মন্তব্য করেন নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্ল্যানিং কমিশনের সাবেক ডিভিশন চিফ মিসেস মমতাজ মান্নান।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী অধিকার আন্দোলন এক নারী সংঠনের উদ্যোগে দেশব্যাপী শিশু আছিয়াসহ অসংখ্য নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং দায়ীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।

মানববন্ধনে বিভিন্ন বয়স, শ্রেণী-পেশার কয়েকশত নারী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ‘নারী অধিতার আন্দোলন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘নির্যাতন ও ধর্ষণকারীদের, শাস্তি চাই শাস্তি চাই’, ‘নারী শিশুদের সুরক্ষা দিতে হবে দিতে হবে’, ‘ধর্ষকদের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকেন।

মমতাজ মান্নান বলেন, এক সময় বাংলাদেশে এসিড নিক্ষেপের প্রবণতা ছিল। কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের মাধ্যমে তা কমানো গেছে। আমরা আশা করব ধর্ষকদের, নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের জনসম্মুখে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হবে। তাহলেই তারা আর নির্যাতন করার, ধর্ষণ করার সাহস পাবে না।

সম্প্রতি শিশু আছিয়ার ওপর পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে আর এতে তার জীবন তছনছ হয়ে গিয়েছে। এই ঘৃণ্য কাজের প্রতিবাদ জানানোর জন্য নারী অধিকার আদায়ে সোচ্চার নারী অধিকার আন্দোলন এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।

তিনি বলেন, বহু প্রকারে, বহুদিন ধরে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন চলছে। বিচারহীনতা, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারায় এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ বেড়েই চলেছে।

দ্রুত বিচারের আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, আছিয়ার সঙ্গে হওয়া অপরাধের বিচার কাজ দ্রুততম সম্পন্ন করে অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করবেন। আমরা এই আবেদন জানাচ্ছি। আসুন আমরা আমাদের বিবেককে জাগ্রত করি এই সকল অপকর্ম অত্যাচারের বিরুদ্ধে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাই।

মানববন্ধনে তারা নারী ও শিশুদের জন্য একটি সুস্থ্য ও নিরাপদ ভূবন গড়ে তোলতে ৬টি দাবি জানান- নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা, দোষী ব্যক্তিদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে যথা সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করা, শরিয়াহ আইনের মাধ্যমে এই নিকৃষ্ট কাজের বিচার করা যেতে পারে, নারী ও শিশুর প্রতি পাশবিক অত্যাচার দমনে কঠোর দণ্ডবিধি প্রয়োগ করা, এবং এই দণ্ড প্রকাশ্যে কার্যকর করা যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের অন্যায় কাজ করতে কেউ সাহস না পায়।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারী অধিকার আন্দোলনের সহ সভানেত্রী, ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ডা: নাঈমা মোয়াজ্জেম, সাধারন সম্পাদক নূরুন্নাহার, লালমাটিয়া মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আফিফা মুশতারী, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: তাহেরা বেগম, ড. শারমিন ইসলাম, বিশিষ্ট লেখিকা নুরুন্নাহার খানম নীরু, সৈয়দা শাহীন আকতার, ড: সাজেদা হুমাইরাসহ নারী অধিকারের নেতৃবৃন্দ