
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১০ শিক্ষার্থীকে সাংবাদিকতা করার দায়ে বহিষ্কার করার বিষয়কে বেআইনি উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে ‘খেলা হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র সামনে আমাদের প্রতিবাদ হবে। ইউজিসি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করব, তারপরে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে আমাদের খেলা হবে। এই খেলার সূত্র ধরে যত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে প্রত্যেকের সাথেই আমাদের খেলা হবে। নিয়মের মধ্যে যারা চলছেন, তারা তো চলছেনই; যারা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাচ্ছেন, নিয়মের বাইরে চলছেন, তাদের প্রত্যেকের সাথে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের খেলা হবে।
সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি নিকৃষ্ট কাজ করেছে। শামীম হায়দার পাটোয়ারী আপনি টকশো’তে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন, আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাকে অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। ভিসি মহোদয়, আপনি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিন। নতুবা আপনাদের দুজনের অফিস নয়, বাড়িও ঘোরাও করা হবে। আপনাদের নগ্ন চেহারা তুলে ধরা হবে।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতি’র ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এসময় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, সাংবাদিকতা করার দায়ে সাময়িক বহিষ্কার করে যে অবিচার করা হয়েছে সে সম্পর্কে আমি একটু আগে ভিসিকে কল করেছিলাম৷ তিনি কল রিসিভ করেন নাই৷ এই ধরনের অপরাধ কিছুতেই সহ্য করা যায় না৷ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদদাতা রয়েছে৷ সাংবাদিকতা করার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের এই ঘটনা আমি কখনোই শুনি নাই৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরণের অন্যায় কিছুতেই সহ্য করা হবে না।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অবশ্যই অনিয়ম হচ্ছে। এজন্য সাংবাদিকদের সাংবাদিকতা করতে দিচ্ছে না। ছাত্রদের অবশ্যই বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে, একইসাথে তাদের সাংবাদিকতা করতে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করা না গেলে এর পরিনাম ভালো হবেনা ৷
ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি’র সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কারও নিজের নিয়ম অনুযায়ী চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী চলতে হবে। মঞ্জুরি কমিশনের আইন অনুযায়ী চলবে৷ ভিসি সাহেবের আইন অনুযায়ী চলবে না৷ অন্যায়ভাবে কাউকে বহিস্কার করা যাবে না, তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতেই হবে। এটা মগের মুল্লুক নয়৷ আমি শামীম হায়দার পাটোয়াকে কল দিয়েছিলাম৷ তিনি আমার সাথে মিথ্যাচার করেছেন৷ অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাদের মর্যাদা দিয়ে সাংবাদিকতা করার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ দিতে হবে৷ না হলে আমরা আমাদের মতো করে ব্যবস্থা নিব৷ আন্দোলন কিভাবে করতে হয় আর দাবি কিভাবে আদায় করতে হয় সেটা সাংবাদিক সমাজ জানে৷
ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি’র সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে যে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ আমার উপস্থিতি শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে কল দেন৷ কিন্তু এরপরেও তার কানে পানি যায়নি৷ কাজটি তিনি ঠিক করেননি৷ আপনি যদি সল্প সময়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করেন তাহলে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা হয় নাকি ব্যবসা হয় সেটি সবার সামনে তুলে ধরা হবে৷ তখন কিন্তু আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হবে৷ মুখ দেখাতে পারবেন না৷
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব বলেন, আন্দোলনের ট্রেনে আমরা উঠেছি, আপনারা ভয় পাবেন না। আন্দোলন শুরু হয়েছে, আমরা আপনাদের সাথে আছি, আপনারাও সাথে থাকবেন। এটার শেষ দেখে ছাড়বো। জয় আমাদের হবেই।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ সোহেলী চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য সাজেদা হক, সাবেক সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, সাবেক তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, এডুকেশন রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইরাব) সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামানসহ অনেকে।