কোটা আন্দোলনের ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে রাজধানীতে দ্বিতীয় দফা হামলার পরিকল্পনা করেছিল ঢাকার পার্শ্ববর্তী উপজেলার জামায়াত ও শিবির কর্মীরা। ‘কাশফুল ২.০’ নামে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের মাধ্যমে হামলার পরিকল্পনা সাজিয়েছিল তারা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুরের একটি বাসা থেকে নবাবগঞ্জ উপজেলা পশ্চিমের জামায়াতের নায়েবে আমির ও থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে নবাবগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) আমিনুল ইসলাম।
তিনি জানান, শনিবার বিকেলে উপজেলার কাশিমপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জামায়াতে ইসলামী নবাবগঞ্জ থানা পশ্চিমের নায়েবে আমির মো. হারুন অর রশিদ (৪৯), নবাবগঞ্জ থানার ছাত্রশিবিরের সভাপতি সালাউদ্দিন আমান (২৩), সেক্রেটারি শাহরিয়ার মুরসালিন অনিক (২১), অর্থবিষয়ক সম্পাদক তামিম ইউসুফ (১৯), সাথী সদস্য জাকির হোসেন (২১) ও তৌফিকুল তাহসিন মাহি ওরফে আবু হুরায়রা (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে আমিনুল ইসলাম জানান, কোটা আন্দোলনকে ইস্যু করে ঢাকাসহ সারাদেশে নাশকতা চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে উপজেলার কাশিমপুর এলাকার শামসুল ইসলাম খানের বাড়িতে কয়েকটি রুম ভাড়া নিয়ে নিজেদের অফিস বানিয়ে সেখানে বসে নবাবগঞ্জের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করার জন্য গোপন বৈঠক করছেন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। সে তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার বিকেলে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম সেখানে অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নবাবগঞ্জ থানা পশ্চিমের নায়েবে আমির মো. হারুন অর রশিদসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে অন্যান্য আসামিরা পালিয়ে যান।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ‘কাশফুল ২.০’ নামে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের মাধ্যমে ঢাকায় ২য় দফা হামলার পরিকল্পনা করেছিল জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের আটককৃত কর্মীরা। ঘটনাস্থল থেকে কাচের বোতল দিয়ে তৈরি ৭টি পেট্রোল বোমা, লোহার তৈরি ৩টি শাবল, বাঁশের ১৫টি লাঠি, বিভিন্ন সাইজের ৯টি লোহার রড, দুটি ল্যাপটপ, ইসলামী উগ্রবাদী লেখা ১৪৬টি বই, একটি পুরাতন মোটরসাইকেল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা জেলা দক্ষিণের একটি ব্যানার, নগদ টাকা, বিভিন্ন চাঁদার রশিদ বই, ইটে টুকরার বস্তাসহ বিভিন্ন রেজিস্ট্রার উদ্ধার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। তাদের রিমাণ্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম ও নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ জালাল।