শৌচাগারকে আলোচনা বা আড্ডায় শান্তির জায়গা বলা হলেও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠের বেলায় যেন বিপরীত দশা। এখানকার শৌচাগারটিতে এমনই বেহাল দশা যে, প্রসাবের দুর্গন্ধে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এতে এই মাঠ দিয়ে দৈনিক চলাচল করা হাজারও মানুষের পাশাপাশি মাঠে খেলতে আসা বিভিন্ন ক্রিকেট ও ফুটবল টিমের খেলোয়াড়রাও পড়েছেন বিপাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শৌচাগারটির প্রসাব ও পানি নিস্কাশন ব্যবস্থায় সমস্যা হওয়ার কারণে তা মাঠের মধ্যে প্রবেশ করছে। এতে করে মাঠের চারপাশে হাটতে আসা মানুষজন দুর্গন্ধে অনেক দূর দিয়ে নাক চেপে ধরে যাতায়াত করছেন। তাই খুব দ্রুত এর সংস্কার করা প্রয়োজন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেট দিয়ে প্রসাব বের হয়ে মাঠের ভেতরে প্রবেশ করেছে। আর দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে সেখানকার বাতাস। ফলে মাঠে নিয়মিত হাটতে আসা মানুষজন সেখানে এলেই নাক বন্ধ করে অনেক দূর দিয়ে সে অংশটুকু পার হচ্ছেন। টাউন ক্লাব সংলগ্ন অংশে এ শৌচারগারটি দীর্ঘদিন ধরে এমন বেহাল অবস্থায় পরে থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ অথবা টাউন ক্লাব বা পৌরসভার পক্ষ থেকে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। ফলে মাঠে আসা খেলোয়াড়, শিক্ষার্থীর অভিভাবক, ঘুরতে আসা মানুষজন ও নিয়মিত হাটতে আসা মানুষজনের দুর্ভোগ যেন চরমে উঠেছে।
টাউন ক্লাবের সদস্য নাজমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পৌর শহরের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠ। বর্তমানে যাবতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেমন, চটপটি, ফুচকা, খেলনা, হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, চাইনিজ, কাঁচামাল, পুরাতন কাপড় ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানপাঠ মাঠকে ঘিরে চালু হয়েছে। সারাদিনে কমপক্ষে ২ সহসাধ্রিক মানুষ মাঠের ভেতরে বিভিন্ন কাজে চলাফেরা করে। ভয়ংকর তথ্য হলো এত মানুষের সমাগম হলেও মাঠের চারপাশে নেই কোন শৌচাগার। এ শৌচাগারটি মানুষজন বাজেভাবে ব্যবহারের ফলে ময়লা-আবর্জনা জমে নষ্ট হয়েছে।
মাঠের চারপাশে রাতে নিয়মিত হাটতে আসা পৌর শহরের হলপাড়া মহল্লার ফেরদৌসী বেগম বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত রাতে মাঠের চারপাশে হাটি। আমাদের মত কয়েকশ মানুষ এখানে হাটে। কিন্তু এখানে আসার পর দুর্গন্ধে এ অংশটুকু পার হওয়া দায় হয়ে যায়।
ফুটবল খেলোয়াড় জাহিদ হোসেন জানান, মাঠে নিয়মিত ক্রিকেট ও ফুটবলের বেশ কয়েকটি টিমের কমপক্ষে ২ শতাধিক খেলোয়াড় মাঠে খেলতে আসে। কিন্তু এ শৌচাগারটির বেহাল দশার কারণে সেটি ব্যবহার করতে পারছে না।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীর অভিভাবক সিমা আক্তার বলেন, আমার সন্তানকে বেশ কিছুদিন ধরে মাঠের পাশেই প্রাইভেট পড়াতে নিয়ে আসি। প্রাইভেটে দিয়েই আমি ও বেশ কয়েকজন অভিভাবক মাঠেই আড্ডা দেই। কিন্তু শৌচাগারটিতে গেলেই দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। এটি সংস্কার করা জরুরী।
এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু বলেন, ইতিপূর্বে শৌচাগারটি সংস্কার করা হয় এবং একজন পরিচ্ছন্ন কর্মীও নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু তিনি চলে গেলে এবং মানুষের বাজেভাবে ব্যবহারের ফলে শৌচাগারটির এমন অবস্থা। তিনি এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান।
অন্যদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শৌচাগারটি সংস্কার করে দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে জনসাধারন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত