ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান

ঠাকুরগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁও গ্রামে নির্মিত ফাইভ স্টার ব্রিক্স নামের ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসনের এনডিসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কাইয়ুম খান।

জানা যায়, গত বছর বরুনগাঁও গ্রামে ফাইভ স্টার ব্রিক্স নামের ইটভাটা গড়ে তোলে সামসুজ্জোহা বাবলু নামে এ ব্যক্তি। এরপর সামসুজ্জোহা বাবলু ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র নেয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করেন। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় ১৩তম সভায় ঠাকুরগাঁওয়ের ‘ফাইট স্টার ব্রিক্স’ নামের ইটভাটাকে পরিবেশগত ছাড়পত্র না দিতে সিদ্ধান্ত হয়। সে সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ১৬ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর জেলা অফিসের উপ-পরিচালক মেজ-বাবুল আলম স্বাক্ষরিত এক পত্র সামসুজ্জোহা বাবলুকে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ফাইভ স্টার ব্রিক্স নামের ইটভাটার দক্ষিণ পশ্চিম কোনে প্রায় ৫শ মিটার পরে বরুনাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্র আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) অনুসারে ইটভাটার স্থান গ্রহণযোগ্য নয় এবং পরিবেশগত ছাড়পত্রের আবেদন না মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ইটভাটাটি অতিসত্বর অন্যত্র আইনসম্মত স্থানে স্থানান্তর করার জন্য বলা হয়।

অনেকদিন পেরিয়ে গেলেও ফাইভ স্টার ব্রিক্স নামের ইটভাটাটি অন্যত্র সরিয়ে না নেওয়ায় বুধবার দুপুরে সে ইটভাটা অপসারণে অভিযান চালায় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের এনডিসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) আব্দুল কাইয়ুম খান। এসময় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে স্কেবেটর মেশিন দিয়ে ইটভাটা অপসারণ করা হয়।

এদিকে ফাইভ স্টার ব্রিক্স ইটভাটাটি স্থাপনে ১৫ শতক জমি দখল করে করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মোশারুল ইসলাম। তিনি বলেন, সামসুজ্জোহা বাবলু আমার ১৫ শতক জমি জোরপূর্বক দখল করে সেখানে ইটভাটা স্থাপন করেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানানো হয়।

ফাইভ স্টার ব্রিক্স ইটভাটার মালিক সামসুজ্জোহা বাবলু বলেন, ইটভাটা নির্মাণের সময় আমরা বুঝতে পারিনি যে ইটভাটা মোশারুলের ১৫ শতক জমি পড়ে গেছে। আমরা তার সাথে কথাও বলেছি অন্যত্র জমি বদল দিতেও চেয়েছি। কিন্তু তিনি শুনেননি।

পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই কেন ইটভাটা নির্মাণ করলেন এমন প্রশ্নে সামসুজ্জোহা বাবলু বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় ১শ’র বেশি ইটভাটা রয়েছে, এরমধ্যে মাত্র ২টা ভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র রয়েছে; বাকিগুলোর নেই। আমার ইটভাটা অপসারণ করা হচ্ছে, তাহলে অন্য ভাটাগুলো কি করবে? আমি আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছিলাম।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, আইন অমান্য করে ফাইভ স্টার ব্রিক্স নামে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছিল। তাই আজ ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে সেই অবৈধ ইটভাটা অপসারণ করেছে। জেলার অন্য ভাটাগুলোর পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকলে সেখানেও অভিযান চলবে। অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সময় পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।