উত্তরের কৃষি নির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। দেশের মোট উৎপাদিত কৃষি পণ্যের একটা বড় অংশই চাষ হয় এ জেলায়। এখানে ভারী শিল্প কারখানা বলতে রেশম কারখানা ও সুগারমিলটিকেই বোঝানো হত। ২০০১ সালে রেশম কারখানাটি বন্ধের পরে সুগারমিলটিই ছিলো এ জেলার একমাত্র ভারী শিল্প কারখানা। লোকসানের বোঝা নিয়ে খুড়িয়ে চলা এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছরই তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে শহরের সেনুয়া নদীর ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত যন্ত্রাংশ দিয়ে নির্মিত সুপ্রিয় জুট মিল নামে একটি পাটকল আত্ম প্রকাশ করে। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের আর্থিক সহযোগীতায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত দৈনিক ২০ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এ মিলে গড়ে প্রতিদিন ৩০হাজার বস্তা উৎপাদন হয় ও বছরে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টন পাট ব্যবহৃত হচ্ছে এবং মিলটিতে মোট ৩ শিফটে ১২ শ শ্রমিক কাজ করছে বলে জানান মিল কর্তৃপক্ষ। তাদের উৎপাদিত পন্যের মধ্যে বস্তা , পাট সূতা ও উন্নত চট অন্যতম।
এ মিলটি হওয়াতে একদিকে যেমন এলাকার বেকার নারী পুরুষ ও যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি অপরদিকে স্থানীয় পাট চাষীরাও তাদের উৎপাদিত পাট ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এতে পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। এ মিলটিতে উৎপাদিত পন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ইতিমধ্যে পার্শ^বর্তী দেশ ভারতে পন্য রপ্তানী করে সুনাম অর্জন করেছে।
সুপ্রিয় জুট মিলের স্বত্ত¡াধিকারী বাবলুর রহমান বাবলু জানান, বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের ফলে আমাদের পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদার নতুন দিগন্ত সূচনা হয়েছে। এ সূচনাকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় বাজারসহ আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের উৎপাদিত পাট জাত পণ্যের চাহিদা বাড়ানো এবং সে অনুযায়ী উৎপাদন কার্যক্রম চালানোর জন্য আমরা নীরলস কাজ করছি।
মিলের কর্মরত শ্রমিকরা জানান, আমরা মিলটিতে কাজ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছি ।
জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন,ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে দেশের অর্থনিতীতে বড় ধরনের ভ’মিকা রাখায় মিলটির প্রতিষ্ঠাতা বাবলুর রহমান বাবলুকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, দেশের বিত্তবানরা যদি বাবলুর রহমানের মতো এমন উদ্যোগে অনুপ্রানিত হয়ে এ ধরনের ভারী শিল্প কারখানা গড়ে তুলে তবে দেশের বেকারত্ব দূরীকরনে বড় ধরনের ভ’মিকা রাখবেন বলে আশা করছি।