এখন পর্যন্ত আইসিসির কোন ইভেন্টের শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে শুধি পারফরমেন্স নয়,বিশ^কাপ জিততে হলে ভাগ্যের সহায়তাও লাগে বলে মনে করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ধারাবাহিক ভিডিও সিরিজ ‘দ্য গ্রিন রেড স্টোরি’তে মাহমুদুল্লাহ বলেন, কয়েকটি মেগা ইভেন্টে খুব কাছাকাছি যেতে পারলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। আশা করি, চলতি বিশ^কাপে ভালো কিছু হবে।
মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘সব সময়ই সুযোগ থাকে। চেষ্টাতেও আমাদের কোন কমতি থাকে না। ট্রফি জিততে আমার মনে হয় ভাগ্যেরও একটু সহায়তা লাগে। আমরা কয়েকটি মেগা ইভেন্টে হয়তো খুব কাছাকাছি গিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা পারিনি। কিন্তু এখন আরেকটি সুযোগ সামনে। যা যা করা সম্ভব আমরা করবো। ইনশাআল্লাহ, হয়তো এবার আমরা ভালো কিছু করবো।’
২০০৭ সালে ওয়ানডে দিয়ে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ান মাহমুদুল্লাহ। এরপর দলের বড় ভরসার নাম হয়ে গেছেন তিনি। দেশের হয়ে ৫০টি টেস্ট, ২৩২টি ওয়ানডে ও ১৩১টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মাহমুদুল্লাহ। জাতীয় দলের জার্সি পড়লেই বিশেষ অনুভূতি কাজ করে তার, ‘জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করা, সেটা কোন সিরিজ হোক বা কোন মেগা ইভেন্ট হোক, সব সময়ই স্পেশাল। যখনই নতুন জার্সিটা পাই, সব সময়ই খুব ভালো লাগে।’
২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। পরের বছর অস্ট্রেলিয়া অনুষ্ঠিত বিশ^কাপ দলে জায়গা পাননি তিনি। বিশ^কাপ দলে সুযোগ না পাওয়ায় খারাপ লাগলেও, তাতে কোন কষ্ট নেই মাহমুদুল্লাহর, ‘২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যখন আমি ছিলাম না, খারাপ লেগেছিল। আমার কাছে মনে হয়েছিল, দলে হয়তো থাকতে পারতাম। কিন্তু কোন কারনে হয়নি এবং ওটার জন্য আমার কোন কষ্টও নেই। আমি সব সময়ই আলহামদুলিল্লাহ। দলের জন্য যতটুকুই আমি করতে পারি, সেটা আমার উপস্থিতি দিয়ে হোক, পারফরমেন্স দিয়ে হোক, আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে হোক, আমি আমার সর্বোচ্চটাই সব সময় নিংড়ে দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘উত্থান-পতন তো আমার ক্যারিয়ারে কমবেশি ছিলই। আমি সব সময়ই আল্লাহর উপর বিশ্বাস করি। আল্লাহর কাছেই সব সময় যা কিছু বলার আমি বলি। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করি, আল্লাহ হচ্ছেন সেরা পরিকল্পনাকারী। আমার ভালো সময়, খারাপ সময় সবকিছুরই একটি শিক্ষণীয় বিষয় থাকে এটাই আমি বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত প্রশংসা করেছেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘সে খুব ভালো নেতা, খুব ভালো অধিনায়ক। গেম সেন্স খুব ভালো। ম্যাচে মনোযোগও খুব ভালো। কিন্তু আমাদের তাকে সময় দিতে হবে। কিছুদিন হলো অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছে। তাকে সময় দিতে হবে। আশা করি, তার যা নেতৃত্বগুণ আছে, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের জন্য ভালো করবে।’
ক্রিকেট জগতে আসার পেছনে বড় ভাইয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমার আপন ভাই, উনি ক্রিকেট খেলতেন। তার হাত ধরেই আমার পথচলা। আমার ছোটবেলার পথচলা শুরু হয়। আমার ক্রিকেটের হাতে খড়ি সবকিছুই উনার মাধ্যমে। ভাইয়াই সব সময় আমার অনুপ্রেরণা ছিল।’
বিশ^ ক্রিকেটে দুই সাবেক ক্রিকেটার পাকিস্তানের সাইদ আনোয়ার ও ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনির খেলা পছন্দ মাহমুদুল্লাহর, ‘সাঈদ আনোয়ারের খেলা খুব ভালো লাগত, যখন আস্তে আস্তে খেলা বুঝতে শুরু করেছি। এমএস ধোনির খেলা খুব ভালো লাগে। আমি তার অনেক বড় ভক্ত। তার টেম্পারামেন্ট এবং শান্ত মেজাজ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এই জিনিসগুলো আমার খুব ভালো লাগে।’
ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ভালো-খারাপ সময় পরিবারকে সবসময় কাছে পেয়েছেন বলে জানান মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমার ভালো-খারাপ সব সময়ই পারিবার আমার পাশে থাকে এবং আমাকে সাপোর্ট করে। আমার বাচ্চারাও আমাকে অনেক ভালোবাসে আলহামদুলিল্লাহ, সবার বাচ্চারাই সবার বাবা-মাকে অনেক ভালোবাসে। বিশেষভাবে আমার বড় ছেলে এখন কিছুটা হলেও খেলা বুঝে, সে সবসময় চায় আমি ছয় মারি। ছয় মারলে সে খুশি হয়। আলহামদুলিল্লাহ, পারিবারিক জীবন খুবই ভালো যাচ্ছে। আমার জীবন সঙ্গীনিও অনেক সাপোর্ট করে।’