জেন্ডার সমতায় দক্ষিণ এশিয়ায় সবার শীর্ষে বাংলাদেশ

16

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এর ১৫৩টি দেশের নারী ও পুরুষের লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ক ২০২০ সালের প্রতিবেদন মতে লৈঙ্গিক সমতা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পয়েন্ট ৭২ দশমিক ৬। আর সারা বিশ্বেও বাংলাদেশের অবস্থান অনেক উপরে।

ডব্লিউইএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লৈঙ্গিক (জেন্ডার) সমতা সূচকে বাংলাদেশ আগের বছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ এগিয়েছে। তবে, অন্য দেশগুলোর আরো বেশিঅগ্রগতির কারণে সার্বিকভাবে অবস্থান পিছিয়েছে আগের তুলনায় দুই ধাপ। তা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই রয়েছে শীর্ষে। এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর মধ্যে নেপালের বৈশ্বিক অবস্থান ১০১তম, শ্রীলঙ্কা ১০২তম ও ভারত ১১২তম।

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই নারীরা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে। এটি রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন অংশে বাংলাদেশের অবস্থান ওপরে নিয়ে আসতে ভূমিকা রেখেছে। এই সূচকে বাংলাদেশের অর্জন ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ, বিশ্বের সব দেশের মধ্যে এই অবস্থান সপ্তম।

অন্যদিকে অর্থনৈতিক পরিমন্ডলে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে প্রাপ্তবয়স্ক নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে চার শতাংশ। ২০১৮ সালে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণের মাত্রা ৩৮ শতাংশ, যেখানে পুরুষের অংশগ্রহণের হার ৮৪ শতাংশ।

নেতৃত্বের ১০টি সূচকের মধ্যে মাত্র একটিতে নারীর অবস্থান বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে ১৩৯তম অবস্থান। আর নারীদের বাৎসরিক গড় আয় পুরুষের তুলনায় মাত্র ৪০ শতাংশ, যা ২০১৮ সালের তুলনায় তিন ধাপ এগিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।

গত ১৪ বছর ধরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম মোট ১৫৩টি দেশের বৈশ্বিক লৈঙ্গিক বৈষম্য বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। এই সূচক নির্ধারণে চারটি বিষয় বিবেচনায় রাখা হয়-অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সুযোগ, শিক্ষাগত সাফল্য, স্বাস্থ্য ও প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে থাকা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। একইসঙ্গে এ বছরের প্রতিবেদনে ভবিষ্যতের বিভিন্ন পেশায় লৈঙ্গিক অসমতার দিকটিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, আমাদের মধ্যে অনেকেই তাদের বা তাদের সন্তানদের জীবদ্দশায় লৈঙ্গিক সমতা দেখে যেতে পারবেন না। জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২০ অনুযায়ী আগামী ৯৯ দশমিক ৫ বছরের মধ্যেও লৈঙ্গিক সমতা অর্জিত হবে না।

অন্যদিকে, লৈঙ্গিক সমতায় ১১ বছর ধরে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে আইসল্যান্ড। উন্নতি করেছে এমন দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে আলবেনিয়া, ইথিওপিয়া, মালি, মেক্সিকো ও স্পেন।

মহাদেশের হিসেবে পশ্চিম ইউরোপ ৭৬ দশমিক ৭ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে প্রথম অবস্থানে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উত্তর আমেরিকা (৭২ দশমিক ৯), তৃতীয় অবস্থানে ল্যাটিন আমেরিকা (৭২ দশমিক ২)। এর পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া (৭১ দশমিক ৩), সাব-সাহারা আফ্রিকা (৬৮ দশমিক ২), সাউথ এশিয়া (৬৬ দশমিক ১) এবং ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে মধ্য পূর্ব ও উত্তর আফ্রিকা আছে সবার শেষে।