দীর্ঘ আইনি নাটকীয়তা শেষে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক চুক্তিতে পৌঁছানোর পর কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। চুক্তি অনুযায়ী তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন।
৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মার্কিন জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল। কয়েক বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি দিয়ে আসছে, উইকিলিকসের ফাঁস করা ফাইলে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এতে বহু জীবন বিপন্ন হয়েছে।
অ্যাসাঞ্জ গত পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের তথ্যমতে, যুক্তরাজ্যে কারাবন্দি থাকায় অ্যাসাঞ্জকে এবার মার্কিন কারা হেফাজতে থাকতে হবে না। বিচার বিভাগের একটি চিঠি অনুসারে, অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাবেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইকিলিকস জানিয়েছে, অ্যাসাঞ্জ এক হাজার ৯০১ দিন ছোট একটি প্রকোষ্ঠে বন্দি থাকার পর সোমবার (২৪ জুন) বেলমার্শ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
উইকিলিকসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অ্যাসাঞ্জকে (সোমবার) বিকেলে স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেন।
উইকিলিকসের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, জিন্স ও নীল শার্ট পরা অ্যাসাঞ্জকে স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিবিসি স্বাধীনভাবে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা এক্স পোস্টে লেখেন, এটিকে বাস্তবে পরিণত করতে যারা বছরের পর বছর ধরে সংগ্রাম করেছেন, সেই সমর্থকদের ধন্যবাদ।
গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অ্যাসাঞ্জের দোষ স্বীকারের চুক্তিটি আগামীকাল বুধবার (২৬ জুন) উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের একটি আদালতে চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের একজন মুখপাত্রের উদ্ধৃত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলাটি খুব দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও তার আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, তিনি অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারে অস্ট্রেলিয়ার অনুরোধ বিবেচনা করছেন। মে মাসে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট রায় দেন, অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে নতুন করে আপিল আবেদন করতে পারবেন। এ রায়ের পরে অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা সাংবাদিক ও সমর্থকদের বলেন, বাইডেন প্রশাসনের এই লজ্জাজনক মামলা থেকে নিজেদের দূরে রাখা উচিত।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত