আলকামা সিকদার
টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার ঐতিহ্য ও অর্থনীতির চাকা ঘুরানোর আরেক নাম আনারস। আর এই আনারস স্বাদে গন্ধে সারা দেশের অন্য জেলায় উৎপাদিত আনারসের চেয়ে অভিন্ন। আর দেশের মোট উৎপাদিত আনারসের ৭০ শতাংশই পাওয়া যায় এই মধুপুরে। আর এ কারনেই মধুপুরকে আনারসের রাজধানীও বলা হয়ে থাকে। ঊনিশ দশকের শুরুর দিকে মধুপুরে আনারসের চাষ শুরু হলেও সরকারি কোন স্বীকৃতি পেল এই প্রথম। মধুপুরে উৎপাদিত আনারস ভৌগলিক নির্দেশকা বা (জিআই)পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
গত সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধুপুরের আনারসকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতির সনদ দেয়া হয়।
বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প–নকশা ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুমিন হাসানের স্বাক্ষর করা সনদে ৩১ শ্রেণিতে জিআই–৫২ নম্বরে মধুপুরের আনারসকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ইদিলপুর গ্রামের গারো সম্প্রদায়ের উপজাতী নারী মিজি দয়াময়ী সাংমা ১৯৪২ সালে বাংলাদেশে প্রথম আনারস চাষ শুরু করেন। এই গারো নারী ভারতের মেঘালয়ে তার আত্মীয় বাড়ী থেকে চারা এনে তার বাড়িতে প্রথম আনারস চাষ শুরু করেছিলেন। তারপর থেকেই এই আনারস কালক্রমে মধুপুর উপজেলাসহ পাশের জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এর চাষ ছড়িয়ে পরে। বর্তমানে মধুপুরের প্রধান অর্থকরি ফসল হচ্ছে আনারস।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমাদের অবস্থান শক্তিশালী করতে দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের জিআই স্বীকৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আনারসের জিআই স্বীকৃতি লাভ মধুপুরবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের বিষয়।
চলতি বছর জেলায় ৭ হাজার ৭৭৩ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মধুপুর উপজেলায় ৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর এবং ঘাটাইল উপজেলায় ১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। দেশে ও বিশ্ববাজারে এখন আনারস মানেই মধুপুরের আনারস। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে আনারস রপ্তানির সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে।