জাপান থেকে আসা দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের মায়ের কাছে থাকার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তবে শিশুদের বাবা তাদের ইচ্ছা মাফিক দেখতে যেতে পারবেন বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুই কন্যাকে দুই দিন গুলশানে তার মায়ের বাসায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ
আদেশ অনুযায়ী, সেই দিন রাত ১০টা থেকে মায়ের সঙ্গে থাকার কথা ছিল শিশু দুটির। কিন্তু বাবা এবং তার মায়ের পক্ষ থেকে সেই আদেশ প্রতিপালন করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ মায়ের কাছে দুই শিশু কন্যাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি ওই দিন রাতে।
আদালতের আদেশ প্রতি পালন না করায় সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে জাপানি মায়ের পক্ষ থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিষয়টি অবগত করা হয়।
সেদিন আদালত তাৎক্ষণিক কন্যাদেরসহ বাবাকে তলব করেন আপিল বিভাগ।
এরপর ওইদিন বেলা ১১টার পর দুই কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বাবা আপিল বিভাগে হাজির হন। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিরা খাসকামরায় ডেকে নেন দুই শিশু কন্যাকে।
তাদের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টা কথা বলার পর তাদের বাবা-মাকেও বিচারকদের খাস কামরায় ডেকে নেয়া হয়। ওই বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের উভয় পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকরা বসে কথা বলেন।
এরপর এজলাসে উঠে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ সোমবার রাতেই মায়ের কাছে শিশুদের বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও বাবা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে আদালত অবমাননা করেছেন বলে মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে জাপানের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিয়ের পর টোকিওতে বসবাস শুরু করেন শরীফ ইমরান ও চিকিৎসক নাকানো এরিকো। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিলেন।
চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ও এরিকোর মধ্যে পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। পরে শরীফ দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। এরপর দুই সন্তানকে নিজ জিম্মায় ফেরত পেতে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন এরিকো।