জাতীয় নির্বাচনে পাশার হিসাব কি উল্টে গেছে?

124

র‌্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর বেশ খোশমেজাজে ছিল বিএনপি। বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ বেশকিছু ফোরামে দৌড়ঝাপ ছিল তাদের। বক্তব্যেও ছিল ভিন্ন সুর। এর কারণ হলো: আগামী নির্বাচন যেন একতরফা না হয়, সেজন্য তারা দেখেছিল আশার আলো।

সেই আশা হয়তো গুঁড়েবালিতে পরিণত হচ্ছে। এখন তাদের সুর পাল্টেছে। বিএনপি নেতারা এখন বলছেন, সরকার তাদেরকে নির্বাচনে আনতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দুই দেশের নাম উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।

মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকার সহায়তা চেয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

তবে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, বিএনপি মূলত র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার পর উচ্ছ্বসিত ছিল। এর কারণ হচ্ছে- তারা ভেবেছিল নির্বাচনকে সামনে রেখেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অন্যান্য বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে থাকবে। এতে সরকার বিগত নির্বাচনগুলোর মতো সহজে একতরফা নির্বাচন করতে পারবে না। এজন্য তারা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছিল। এমনকি বিএনপি কার্যালয়ে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত বৈঠকও করেছিল।

তিনি বলেন, এখন সেই পাশা উল্টে গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের রাজনীতি ও আগামী নির্বাচনের হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়েছে। এর কারণ হলো- সেখানে যুক্তরাষ্ট্র মার খেয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিতে বললেও বাংলাদেশ ভোট দেয়নি। এরপর বাংলাদেশকে নিজ ব্লকে টানতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বাংলাদেশ সফর করেছেন।

সেই সফরে ন্যুল্যান্ড বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ বাস্তবতায় অন্তর্জাতিক আইন ও গণতন্ত্র যখন হুমকিতে তখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেসময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে র‌্যাবের ওপর মার্কিন যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেটি তুলে নেওয়া এবং আগামী নির্বাচন।

তিনি বলেন, এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের আমন্ত্রণে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। সেই সফরে নানা বিষয়ে একমত হচ্ছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সফরে নিশ্চিতভাবেই আগামী নির্বাচন এজেন্ডা হিসেবে থাকবে।

এ বিষয়টি বুঝতে পেরেই বিএনপি নেতারা এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছেন বলে মনে করেন ওই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।