জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সুসাইড নোটে পাওয়া অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকি আম্মানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিপ্ততিতে বলা হয়, গতরাতে (১৫ মার্চ) কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন আইন বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের (১৩তম ব্যাচের) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরী গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুর কারণ হিসেবে তার সুইসাইড নোটে দেয়া আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচের) অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকি আম্মান (আইডি নং-বি ১৮০৫০১০১৬)-কে সাময়িক বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সহায়তাকারী ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ জাকির হোসেনকে আহবায়ক করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ (৫) সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথাও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। কমিটিকে উক্ত ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দ্রুত উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফাইরোজ লিখেছেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানাভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে, আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতাম ও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারী জাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্টদের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায় সেটা কুমিল্লার কারো সৎসাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায়…।’
ফাইরোজ সহকারী প্রক্টর সম্পর্কে আরও লিখেছেন, ‘তিনি বলেছেন, তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে? আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিল। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর।’
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত