চাকরিপ্রার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে ‘ইতিবাচক’ মতামত পাওয়া গেলেও অবসরের বয়সসীমা বাড়াতে চায় না সরকার। চাকরিতে প্রবেশের বয়স কতটুকু বাড়ানো হবে সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহে জমা দেবে গঠিত কমিটি।
বুধবার (০২ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদপর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ অথবা ৩৩ বছর করার বিষয়ে সরকার ইতিবাচক। বয়সসীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কমিটির কাছে সরকারের মনোভাব তুলে ধরা হবে। পরবর্তীতে কমিটি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করবে। তবে কমিটি যদি মনে করে বয়সসীমা আরও বাড়ানো দরকার তাহলে তারা সেভাবেই প্রস্তাবনা তৈরি করবে।’
চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আপাতত অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। এর বাইরে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।’
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরিপ্রার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বয়সসীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে সরকার।
এই কমিটির প্রধান করা হয় সাবেক সচিব আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্যসচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। বুধবার সকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কমিটির সদস্যরা।
সভা শেষে বয়সসীমা বৃদ্ধির জন্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয় নিয়ে যে দাবি আসছে সেটা যৌক্তিক মনে করছি আমরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে চাকরির বয়সসীমা নেই। আমরা সেসব বিবেচনায় নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেবো। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, তারা চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি তুলেছে। তবে সেটা কত হবে তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কারণ বয়স যেটা বাড়বে তা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হবে না। হলে তা স্থায়ীভাবে হবে। পাঁচ বছর পরে আবার তা পরিবর্তন হবে সেটা ঠিক না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে কাজ শুরু হবে।