
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো জননিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি অভিযোগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, চলতি বছর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা কঠিন হবে।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়েছে।
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলতি মাসে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদি সংস্কার কিছুটা হলেও ঘটেছে, কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী নয়। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশিং ব্যবস্থায়, আমি মনে করি না যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।’
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নাহিদ ইসলাম। তিনিই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ, যিনি ড. ইউনূসের নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বলে মন্তব্য করেছে রয়টার্স।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন যুব দলটি জাতীয় রাজনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে পুনর্গঠন করতে পারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কয়েক দশক ধরে হাসিনার আওয়ামী লীগ ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আধিপত্য বিস্তার করেছিল। এই দলগুলো আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, ক্ষমতা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
নাহিদ ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তবে তিনি জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’౼ যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দল এবং ছাত্রকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করছে౼ এর ওপর ঐকমত্য অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এসসিপির আহ্বায়ক বলেন, এই নথি বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং গত বছরের সহিংসতায় নিহত এক হাজার জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করার কথা বলার পর ছাত্র বিক্ষোভকারীরা সংবিধান পরিবর্তনের আহ্বান প্রত্যাহার করে নেন।
নাহিদ বলেন, ‘যদি আমরা এক মাসের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আমরা অবিলম্বে নির্বাচনের ডাক দিতে পারি। কিন্তু যদি আরও সময় লাগে, তাহলে নির্বাচন স্থগিত করা উচিত।’
এনসিপি প্রধান জানান, বাংলাদেশের অনেক ধনী ব্যক্তি তার দলের অর্থায়নে সহায়তা করছেন। শিগগিরই তারা একটি নতুন অফিসের জন্য এবং নির্বাচনের জন্য তহবিল তৈরির চেষ্টা করবেন।