চট্টগ্রাম ব্যুরো
বিগত সরকারের সময় বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার আহত ২০ গণমাধ্যম কর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে সিএমেউজে নেতৃবৃন্দ।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের সমাবেশে হামলার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে জড়িত করার যে অপচেষ্টা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক ও পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সিএমইউজে মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বুধবার বিকালে মূলত: প্রেস ক্লাবের ভেতর থেকে সাংবাদিক- জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা হয়। এতে হামলায় আহত রক্তাক্ত হয় অনেকে। এসময় বিক্ষুদ্ধ জনতা হামলাকারীদের প্রতিরোধ করে।
সমাবেশে হামলার দায় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরে অবস্থানকারী কতিপয় উশৃংখল সদস্যসহ সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করে সিএমইউজে নেতৃবৃন্দের উপর দোষ চাপানোর পাঁয়তারা করছে।
সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমানের সঞ্চালনয় অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ বিএসপিপি চট্টগ্রামের আহবায়ক জাহিদুল করিম কচি, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি ইস্কান্দার আলী চৌধুরী, সিএমইউজে’র সহ সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সিএমইউজের’র সদস্য গোলাম মাওলা মুরাদ, আবু সুফিয়ান, কামরুল হুদা, জামাল উদ্দিন হওয়লাদার, সোহাগ কুমার বিশ্বাস, ওমর ফারুক, নাসিরুদ্দিন রকি ও শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ প্রমুখ।
সভায় জাহিদুল করিম কচি বলেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে একটি চক্র দীর্ঘদীন ধরে ঘাপটি মেরে বসে আছে যারা বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকারে দোসর । প্রেস ক্লাবে বসে তারা এখনো ছাত্র- জনতার বিপ্লবের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই চক্রটি ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক কর্ণফুলীসহ পাঁচটি মিডিয়া হাউস ভাংচূর ও লুটপাট করেছে। এই ছাড়াও চক্রটি ছাত্র- জনতার উপর ফ্যাসিস্ট সরকার পরিচালিত গণহত্যার উস্কানী দিয়েছে।
তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে এই চক্রের সদস্যদের প্রেস ক্লাব থেকে বহিষ্কার ও গ্রেফতার না করলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর এই চক্রটি প্রেস ক্লাব দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগ অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই ভবন থেকে অসংখ্যবার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, ছাত্র-জনতা এবং আলেম-ওলেমাদের উপর হামলা হয়েছে। একইভাবে তারা প্রেস ক্লাব থেকে সাংবাদিক জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা করেছে। যার দায় এখন অতীতের মত অন্যদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছে।
চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতাকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে এই চক্রটিকে গ্রেফতার করে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, প্রশাসনের ভেতর ফ্যাসিবাদী সরকারের সহযোগীরা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদের সহযোগিতায় গণহত্যার দোসররা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের প্রতিহত করতে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ সজাগ আছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএফইউজে’র প্রতিবাদ
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের সমাবেশে হামলা পরবর্তী ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে জড়িত করার যে অপচেষ্টা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র সভাপতি রুহুল আমীন গাজী ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
এক বিববৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদের বিষবৃক্ষ উপরে ফেলা হচ্ছে। চট্টগ্রামে এই চক্রটি এখনো ছাত্র-জনতার বিপ্লবের আখাংকার বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্র করছে।
অবিলম্বে এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আহবানও জানান তারা।