বেশিরভাগ মানুষেরই এক কাপ চা দিয়ে দিনের শুরু হয়। তবে এখন শুধু দুধ চা কিংবা লিকার চা নয়, পাশাপাশি এসেছে আরও ভিন্ন ধরনের সব চা। যেমন- মালাই চা, চকলেট চা, মশলা চাসহ হরেক রকমের চা। পানীয় হিসেবে এসব চায়ের জুড়ি মেলা ভার। ক্লান্ত শরীরটাকে যেন মুহূর্তেই চাঙা করে দেয় এক কাপ চা। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে— সেই গরম চায়ের জন্যও দিবস রয়েছে। শুনে অবাক লাগলেও এমনই প্রচলন শুরু হয়েছে ২০১৬ সাল থেকে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ১২ জানুয়ারি বিশ্বের অনেক দেশে গরম চা দিবস বা হট টি ডে। ১৯৫০ যুক্তরাষ্ট্রের চা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়। আর ২০১৬ সালে এই কাউন্সিল হট টি ডে প্রচলন করে।
অবশ্য আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। যদিও প্রথমে ১৫ ডিসেম্বর ছিল বিশ্ব চা দিবস।
বাংলাদেশিদের চায়ের অভ্যাস শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামল থেকে। তখন স্থানীয় বাজারে চায়ের খুব বেশি চাহিদা ছিল না। বাগানের উৎপাদিত বেশিরভাগ চা ব্রিটেন রপ্তানি হতো। এছাড়া তখন এ অঞ্চলে থাকা ব্রিটিশ বা ইউরোপীয় লোকজন চা খেতেন, স্থানীয় অভিজাত গোষ্ঠীও চা খেতে শুরু করেছিলেন। তখনো বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে চায়ের জনপ্রিয়তা তৈরি হয়নি।
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৪৭ সালে এ অঞ্চলে প্রায় ১৮ মিলিয়ন কেজির মতো চা উৎপাদিত হতো। তার প্রায় ১৫ মিলিয়নই রপ্তানি হতো, তিন মিলিয়ন কেজির মতো এখানে খাওয়া হতো। ১৯৭১ সালে সেই উৎপাদন এসে দাঁড়ায় ৩১ মিলিয়ন কেজিতে। সুতরাং বোঝা যায়, মানুষের মধ্যে চা খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ছিল, চায়ের উৎপাদনও বাড়ছিল। ১৮০০ শতাব্দীর প্রথমভাগে ভারতবর্ষের আসাম ও আশপাশের এলাকায় চা চাষ শুরু হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী নদীর তীরে চা আবাদের জন্য ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে জমি বরাদ্দ হয়। চট্টগ্রাম শহরে ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান চট্টগ্রাম ক্লাবসংলগ্ন এলাকায় একটি চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা কুণ্ডুদের বাগান নামে পরিচিত। ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে সিলেট শহরের এয়ারপোর্ট রোডের কাছে মালনিছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়।
চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তার গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩ হাজার। পানি বাদ দিলে চা হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা-বাগান আছে মৌলভীবাজার জেলায়। এখানকার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও রাজনগরে অনেক চা-বাগান দেখতে পাবেন। সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায়ও চমৎকার ও ঐতিহ্যবাহী কিছু চা-বাগান আছে। দেশের প্রথম চা-বাগান মালনীছড়ার অবস্থান সিলেট শহরেই।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত