বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেছেন, আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মেনে চলছে সরকার। এতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া স্বস্তি ফিরবে না। ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যাওয়া উচিত অন্তর্বর্তী সরকারের।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিসিআই দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক নীতি নিয়েছে; তারল্য সরবরাহ কমিয়েছে। এগুলো দেশের অর্থনীতি, শিল্প ও ব্যবসায়ীদের জন্য অনুকূল নয়। বাংলাদেশ আইএমএফের প্রেসক্রিপশন নিয়ে কিছু জায়গায় প্রস্তুতি নিতে পারি; কমপ্ল্যায়েন্স পূরণ করার জন্য অনেক জায়গায় কাজ করতে পারি। কিন্তু, আইএমএফের প্রেসক্রিপশন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
বিসিআই সভাপতি বলেন, সুদহার বাড়ানো হচ্ছে, ভ্যাট বাড়ানো ও ঋণ শ্রেণিকরণের মেয়াদ ৬ মাস থেকে কমিয়ে ৩ মাসে নিয়ে আসার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হলো। আবার যখন উপদেষ্টা গভর্নরের পক্ষ থেকে বলা হয়, দাম বাড়বে না, শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য শিল্প উদ্যোক্তাদের খুবই চিন্তিত করে। যদি দেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়, তাহলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কীভাবে আসবে।
আনোয়ার-উল আলম বলেন, বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে অর্থনীতি অগ্রাধিকার পাচ্ছে না, এটা পরিষ্কার। সরকার একদিকে সুদহার বাড়িয়ে রেখেছে, অন্যদিকে আছে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত জ্বালানি সমস্যার সুরাহা হয়নি; বরং নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কথা হচ্ছে। ফলে এটা পরিষ্কার, সরকারের কার্যক্রম শিল্প খাতের জন্য ইতিবাচক নয়। এভাবে চললে নতুন শিল্প স্থাপন তো দূরের কথা, বিদ্যমান শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষেও টিকে থাকা কঠিন।
বিসিআইয়ের সভাপতি মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলোও অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা একে অপরকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও- অর্থনীতি নিয়ে কিছু বলছেন না।
দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আনোয়ার-উল আলম বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ভয় কে পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধানও দেখা যাচ্ছে না। তার মত, অন্তর্বর্তী সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চলে যাওয়া উচিত। তাতে সবার মধ্যে স্বস্তি আসবে।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের কথা আছে বাংলাদেশের। তবে এই সময়সীমা ২০২৯ সাল পর্যন্ত পেছানোর দাবি জানিয়েছে বিসিআই।
বিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, পরিচালক শহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার, জাহাঙ্গীর আলম, রেহানা রহমান, শাহ আলম লিটু, নাজমুল আনোয়ার ও খায়ের মিয়া প্রমুখ ব্যবসায়ী নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।