শাহাদাত হোসেন নোবেল, দিঘলিয়া (খুলনা):
পণ্যে ভেজাল ওজনে কম দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি সহ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা রুখতে খুলনার বিভিন্ন বাজারে ভোক্তা অধিকার কর্তৃক অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু দোকানে জরিমানা ও ভেজালকৃত মালামাল জব্দ করেছে।
প্রথম ধাপে নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে অভিযান চালিয়ে কয়েকজন অসৎ মাছ ব্যবসায়ীরা মরা ফ্যাকাশে রঙের মাঝে রং ও কেমিক্যাল মিশিয়ে তরতাজায় রূপান্তরিত করে ক্রেতাদের বোকা বানিয়ে বিক্রি করার সময় গণমাধ্যমের ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। এ সময় হঠাৎ ভোক্তা
অধিকার প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনার কিছু আগে সেখানে উপস্থিত এক সাংবাদিকদের ক্যামেরায় এ ঘটনা ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ওই সকল ব্যবসায়ীদের সকল মাছ ও কেমিক্যাল জব্দ করে ভোক্তা অধিকারের সাথে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এ সময়ে বাজারে উপস্থিত অনেক ক্রেতাগণ অভিযোগ করে বলেন, খুলনা নগরের অন্যতম সন্ধা বাজার হিসেবে খ্যাত ময়লাপোতা আর এই বাজারে আমরা আসি একটু ভালো মানের বাজার করার জন্য। তবে এখানে যদি মানবদেহের ক্ষতি হয় এমন পদার্থ মিশ্রণ করে তড়িতরকারি মাছ গোস্ত বিক্রি করে সেক্ষেত্রে জীবন ঝুঁকির কোন অন্ত নাই।
এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে এ বাজারে ওজনে কম দেওয়ার ক্ষেত্রেও। পাশাপাশি নগরীর শেখপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, দোলখোলা এলাকায় বিভিন্ন মুরগির দোকানে অভিযান চালিয়ে এ সকল জায়গার মুরগি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যের থেকে অধিক মূল্যায় বিক্রি করছে। পাশাপাশি মুরগিদের অধিক পরিমাণে খাদ্য খাবার খাইয়ে ওজন বৃদ্ধি করছে সাথে ওজনেও কম দিচ্ছে এমন অভিযোগের সত্যতা মিলেছে খুলনা নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের মুরগির ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে। সেখানেও জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার।
অপরদিকে অসাধু-কালো বাজারে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের তৎপরতা রুখে দিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে বেশ কিছু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদেরও সন্ধান পেয়েছে ভোক্তা অধিকারের কর্তাগণ। এ সময় ওই সকল ব্যবসায়ীদের নিকট পন্য খরিদের সঠিক ভাউচার দেখতে চাইলে এবং বিক্রয় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার ক্ষেত্রে খরিদ ভাউচার দেখানো ও মূল্য তালিকা ব্যাপারে গরিবওসি করলে ভোক্তা অধিকারের কর্তাগণ তাদেরকে ব্যবসা বন্ধ ও জেল জরিমানার হুমকি দিয়ে বলেছেন দেশের সাধারণ মানুষ আয়ের উপর সামঞ্জস্য রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করে তাদের সাধ্য মতন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে বসেছে আর অপরদিকে আপনারা দুই নাম্বারি করছেন। সাধারণ মানুষদের কাঁধে পা রেখে রাতারাতি অসৎ পথে উপার্জন করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছেন। অথচ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও দেশের গণমাধ্যম কর্মীরা প্রতিনিয়ত আপনাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছে প্রতিবেদন তৈরি করছে তা সত্ত্বেও আপনাদের এ ব্যাপারে কোন বোধগম্য হচ্ছে না। ভোক্তা অধিকার কর্তাদের এসব কথা শোনার পর ব্যবসায়ীরা নানান অজুহাত দেখানোর চেষ্টা করে।
ব্যবসায়ীরা বলেন আমাদের তো পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসা করতে হয় ডলারের দাম বেশি এল সি তে মাল ইমপোর্ট করতে হয় পরিবহন খাতে খরচ বেশি সবকিছু মিলে আমাদের ইনভেস্ট এর উপরে ফিডব্যাক তেমন কিছু পাচ্ছিনা বলে আমরা দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।
এ সময় গণমাধ্যমের একজন কর্মী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য প্রশ্ন করে বলেন সরকার তেল ও চিনির ওপর শুল্ক মওকুফ করেছেন সে ক্ষেত্রেও আপনারা কোনক্রমেই মূল্য কমাচ্ছেন না বরং আগের থেকে তুলনামূলক দাম বেশি নিয়ে বিক্রি করছেন এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আছে এ সকল প্রশ্নের সঠিক কোন উত্তর দিতে না পেরে ব্যবসায়ীরা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কৌশল অবলম্বন করে। নগরীর সকল বাজারের প্রত্যক্ষগত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সহ প্রশাসন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মন্তব্য করে বলেন ব্যবসায়ীরা যদি সৎ মনোভাব নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে ন্যায্য মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না রাখে তাহলে সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের দিন চালাতে উঠবে নাভিশ্বাস। তাছাড়া আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের ধরন হয়েছে চোরে না সোনে ধর্মের কাহিনী কারণ সারাদিন রাত ২৪ ঘন্টা এ সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের পেছনে প্রশাসন তৎপরতার সাথে লেগে থাকলেও এরা গোপনে তাদের কাজ ঠিকই করে যাবে। যার ভুক্তভোগী হবে সাধারণ জনগণ। আর এদের চরিত্রের কারণে বদনামের ভাগীদার হতে হয় আমাদের মতন সংস্থা কর্মকর্তাদের। তবে বর্তমানে বাজারদর নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংস্থা কঠোর অবস্থানে থেকে মাঠ পর্যায় নেমেছে ফলে কোন অসাধু কালো বাজারী সিন্ডিকেট ওজনে কম ভেজাল ব্যবসায়ীদের কোনক্রমে ছাড় দেওয়ার কোন সুযোগ নাই।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত